স্টাফ রিপোর্টারঃ
টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপির এক সক্রিয় কর্মী।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ের পর থেকেই দলের বিভিন্ন স্তরে শুরু হয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলভারির প্রবনতা। দল বদল করে রাতারাতি পুনর্বাসিত হয়েছেন অনেক জামাত-বিএনপি নেতাকর্মী। তেমনি বিএনপি’র একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম নুরু।
আওয়ামী রাজনীতির সাথে মিশে যিনি হয়েছেন ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য।
এবার গুঞ্জণ উঠেছে দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপির কর্মী নুরুল ইসলাম নুরু অবৈধ মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে হতে চলেছেন গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দলের পদ পেতে তিনি মরিয়া হয়ে পড়েছেন। চালাচ্ছেন জোর লবিং।
বিষয়টি নিয়ে ওই ইউনিয়নসহ পুরো উপজেলার রাজনীতিক মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এতে করে দীর্ঘ দিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে যদি সত্যি সত্যি বিএনপির কর্মীকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয় তাহলে আগামীদিনে দলের ব্যপক ক্ষতি হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখে গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে গিয়ে জেলা উপজেলার নেতাদের সামনেই দুপক্ষের ব্যপক সংঘর্ষ হয়। বাধ্য হয়ে সম্মেলন স্থগিত করেই ফিরে আসেন জেলা উপজেলার নেতারা।
সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় স্থগিত হওয়া গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়।
দলের এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের কমিটিতে দলের ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সুবিধাবাদীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময়ের বিএনপির রাজনীতিক মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো নুরুল ইসলাম নুরু আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে তেমন সুবিধা না করতে পেরে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমান। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে দেশে এসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া শুরু করেন। এরই মধ্যে দলের নাম ব্যবহার করে শুরু করেন অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রির ব্যবসা। যা এখনো চলমান। বালুর ব্যবসা করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এবার সেই অবৈধ মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে উপজেলা আওয়ামী নেতৃবৃন্দদের ম্যানেজ করে হতে চাচ্ছেন গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিএনপি নেতা হাফিজ তালুকদার জানান, নুরুল ইসলাম নুরু মেম্বার বিএনপির সমর্থক ছিল। এখন আওয়ামী লীগ করা শুরু করেছেন।
গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল মেম্বার জামান, বালুর ঘাট করেছে তো, তাই সে এখন আওয়ামী লীগ হয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোন্নাফ প্রামানিক বলেন, নুরুল ইসলাম নুরু একসময়ের বিএনপি’র সক্রিয় কর্মী ছিল।গত নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আবদুল আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ট্রাক প্রতীকের সমর্থক ছিলেন।
ইউপি সদস্য নুুরুল ইসলাম নুরু বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেন যে আমি বিএনপি করেছি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, নুর ইসলাম আগে বিএনপি করতে পারে তবে দীর্ঘদিন যাবত সে আমাদের সাথেই চলে।
এ বিষয়ে কালিহাতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার জানান, তার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।