কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ জিয়ার হোসেন (৪৫) মারা গেছেন।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহতের ছোট ভাই ইয়ারুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নিহতের আরেক ভাই আলতাফ হোসেন। তারা উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড়কালোয়া গ্রামের কেঁদো শেখের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নৌকার সমর্থকরা ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রউফ।
নিহতের ছোট ভাই ইয়ারুল বলেন, ‘নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে ১২ জানুয়ারি সকালে সাবেক মেম্বর খালেক ও তাঁর তিন ছেলে রিপন, লিটন, শিপনসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী তার দুই ভাইকে গুলি করে আহত করে। তার মধ্যে জিয়ার মারা গেছেন।
তার দাবি, নৌকায় ভোট দেয়ার কারণেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় তিনি কুমারখালী থানায় মামলা করেছেন।
কয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন বলেন, ‘নৌকায় ভোট দেয়ায় জিয়ারকে প্রতিপক্ষের (ট্রাক মার্কা) লোকজন গুলি করেছিল। তিনি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ বিষয়ে জানতে খালেক মেম্বার ও তার ছেলে রিপন আলীর ফোনে কল দিলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, বেড়কালোয়া গ্রামের সাবেক মেম্বর আব্দুল খালেকের সঙ্গে কেঁদো শেখের ছেলেদের প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। পদ্মা নদীতে মাছ ধরা, যেকোনো নির্বাচনসহ বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে বেড়কালোয়া মোড়ে দুপক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়ায়।
এতে দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। যদিও বা কুমারখালী থানার (ওসি) গোলাগুলি ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করেছিলেন। এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার দিন সকালে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন তারা। অতীতেও কয়েকবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি আবারও নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, শুক্রবার ছররা গুলিতে আহত দুই ভাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। দুইদিন আগে পরিবারের লোকজন জিয়ারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে নিয়ে যায়।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম বলেন, মৃত্যুর খবর শুনেছি। হামলার ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।