কুমিল্লা-২ আসনে ডজন প্রার্থীর তৎপরতা : আসন পরিবর্তনে পাল্টে গেছে চিত্র
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও বসে নেই প্রার্থীরা। দৌড়ঝাপ শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই। বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং এনসিপির নেতাদের প্রার্থীদের মধ্যে তৎপরতা থাকলেও মাঠে নেই আওয়ামী লীগ। ৫ আগস্টের পর থেকেই এলাকা ছাড়া আওয়ামী লীগ। তাছাড়া তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ।
কুমিল্লা-২ ( হোমনা-তিতাস) আসনে এ পর্যন্ত যে কয়জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে, আসুন জেনে নিই তাদের পরিচয় ও সম্ভাবনা।
১. ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন:
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। তিনি মনোনয়ন পেয়ে এমপি হলে মন্ত্রী বা তার চেয়ে বেশি কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, দল মনোনয়ন দিলে আমি কুমিল্লা-১ ও কুমিল্লা-২ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবো। মনোনয়ন পেলে ২টি আসন থেকেই নির্বাচন করব। বিএনপি প্রভাবশালী এই নেতা সাংগঠনিকভাবে খুবই শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন।
২. মোঃ আক্তারুজ্জামান সরকার:
তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির তিন বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতিতে হ্যাট্রিক করার এমন নজির নেই।
বিএনপির একজন নিবেদিত প্রাণ রাজপথের লড়াকু সৈনিক। তিনি মনোনয়ন পেতে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আর্শীবাদ নিয়েছেন। তিনি সাংগঠনিকভাবে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। ইতোমধ্যে তিনি সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছেন।
৩. ইঞ্জিনিয়ার এম এ মতিন খান:
তিনি জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে সর্বত্র পরিচিত। তিনি সাবেক সচিব ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস। একজন ভালো মনের মানুষ হিসেবে মানুষ তাকে চিনে। এছাড়াও তিনি যখন এপিএস ছিলেন, অসংখ্য মানুষকে চাকরি দিয়েছেন, উপকার করেছেন। দলমত নির্বিশেষে তিনি সকলের নিকট একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তিনি এমপি হলে এলাকার উন্নয়ন অগ্রগতি হবে বলে, অনেকেই বিশ্বাস করেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে তার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না এমনটাই মনে করেন নেতাকর্মীগণ।
৪. মোঃ আমির হোসেন ভূইয়া:
সাবেক এমপি মোঃ আমির হোসেন ভূইয়া একজন ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত। তিনি এমপি থাকা অবস্থায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। সকলের মাঝে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনিও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন, দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি আশাবাদী হোমনা-তিতাস এর জনগণ তাকে মূল্যায়ন করবেন।
৫. মোঃ মনোয়ার সরকার:
তিনি তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রামের সন্তান। লন্ডন প্রবাসি। যুক্তরাজ্য জিয়া পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এলাকায় প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে এলাকায় তেমন কেউ তাকে চিনেন না। তবে ইতোমধ্যে হোমনা তিতাসে তিনি ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করে পরিচিতি পাবার চেষ্টা করছেন।
৬. ড. খন্দকার মারুফ হোসেন:
তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর পুত্র। উত্তরাধিকার সূত্রে খানিকটা এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনী মাঠে তার গ্রহণযোগ্যতা বাবার মতো নয়। তিনিও চাইছেন বিএনপির নমিনেশন পেতে। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ড দিবে কিনা সেটাই প্রশ্ন?
৭. সাঈদ আহমেদ সরকার:
সাঈদ আহমেদ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। এনসিপি তিতাস উপজেলা শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৪ সালের জুলাই গণ আন্দোলনের একজন যোদ্ধা। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা হিসেবে তিনি নানান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঠ গুছিয়ে নিতে চেষ্টার অন্ত নেই। তিনি আশাবাদী নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিতাস-হোমনাবাসি তাকে বেছে নিবে। তিনি বলেন, মানুষ এখন আর চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
এছাড়াও প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম ভূইয়া। তার জন্মস্থান মেঘনা। আসন বিন্যাসে মেঘনা দাউদকান্দির সাথে থাকায় তিনি পরেছেন বিপাকে। তিনি হোমনার সাথে মেঘনার পুনঃ বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন। শেষ পর্যন্ত না হলে তিনি কুমিল্লা-২ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা গেছে।
এছাড়া আলোচনায় আছেন, উপদেষ্টা রেজওয়ানা চৌধুরীর স্বামী আবু বকর সিদ্দিক লিটু,
হোমনার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ মোল্লা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল হক জহর ও এম কে আনোয়ার এর কন্যা খাদিজা আক্তার রিনার নামও শোবা যাচ্ছে।