কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
থানায় এসে এক ব্যক্তি পুলিশকে বলেন, বাড়িতে স্ত্রীকে হত্যা করে এসেছেন তিনি। প্রথম দফায় বিষয়টি আমলে নেয়নি পুলিশ।
এরপর তিনি বললেন, ‘আমাকে সঙ্গে নিয়ে চলেন, লাশ দেখাব।’ এবার নড়েচড়ে বসে পুলিশ। টহল পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে ওই ব্যক্তির বাসায় গিয়ে পাওয়া যায় লাশ।
বুধবার রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কলেজ মোড় এলাকায় রাজু আহম্মেদ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ রত্না খাতুন (৩৫) নামের ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত রত্না জেলার মিরপুর উপজেলার চারমাইল এলাকার নাজিম উদ্দীনের মেয়ে।
তাঁর স্বামী রনি হোসেন (৩৮) কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় ইজিবাইকচালক। তাঁদের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার বলেন, রাত সাড়ে আটটার দিকে এক ব্যক্তি থানায় প্রবেশ করেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে (সেন্ট্রি) জানান, তিনি বাসায় স্ত্রীকে হত্যা করে এসেছেন। প্রথমে পুলিশ সদস্য বিষয়টি বিশ্বাস করেনি। ওই ব্যক্তি নিজের নাম রনি হোসেন ও বটতৈল এলাকায় বাড়ি পরিচয় দিয়ে আবারও হত্যার কথা জানান। নিশিকান্ত সরকার বলেন, ‘একপর্যায়ে আমার কাছে আসে।
আমিও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এভাবে কেউ হত্যা করে থানায় আসে নাকি। রনি এ সময় সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন। একপর্যায়ে শহরে টহল পুলিশের গাড়িতে করে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে তাঁর বাসায় যায়। রনি পুলিশকে শহরের কলেজ মোড় এলাকায় রাজু আহম্মেদ সড়কের একটি তিনতলা বাড়ির তৃতীয় তলার ডান পাশের ফ্ল্যাটে যান। সেখানে বাসার শৌচাগারের ভেতরে পড়ে থাকা লাশ দেখান। হাত দিয়ে গলাটিপে হত্যার পর লাশ শৌচাগারে রেখেছিলেন বলে দাবি করেন রনি।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার আরও বলেন, হত্যার প্রাথমিক কারণ হিসেবে রনি বিশ্বাস দাবি করেছেন, রনির অঙ্গহানি করার হুমকি দিয়েছিলেন রত্না। তাঁরা বটতৈল এলাকায় থাকেন। বুধবার সন্ধ্যায় শহরে কলেজ মোড় এলাকায় রনির মায়ের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। সেখানে কৌশলে তাঁকে গলাটিপে হত্যা করেন। রনি বিশ্বাসকে থানায় নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে রয়েছেন।