হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার খোকসায় গম কাঁটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। এবছর গমে ভাল ফলন হওয়ায় খুশি উপজেলার কৃষকরা। অনুকূল আবহাওয় ও সঠিক সময়ে কৃষকরা জমিতে বীজ বপন করতে সক্ষম হওয়ায় এ উপজেলায় এবার গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় গম কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী এবছর উপজেলায় এবছর গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৬৭০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার থেকেও ১৪০ হেক্টর জমিতে বেশী গমের আবাদ হয়েছে। উপজেলা এবার ব্লাস্ট-প্রতিরোধী গমের জাত বারি ৩০,৩২ ও ৩৩ এর আবাদ বেশি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত, নতুন এই জাত ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর।
এদিকে উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ২৮টি ব্লকের এবার গমের সর্বোচ্চ আবাদ হয়েছে শিমুলিয়া ইউনিয়নে ১১৫ হেক্টর, জয়ন্তীহাজরা ৮০ হেক্টর, বেতবাড়িয়া ৭৫ হেক্টর, শোমসপুরে ৮০ হেক্টর, ওসমানপুরে ৬০ হেক্টর, আমবাড়িয়ায় ৬০ হেক্টর, গোপগ্রামে ৬৫ হেক্টর, খোকসায় ৫০ হেক্টর, জানিপুরে ৪৫ হেক্টর ও পৌরসভায় ৪০ হেক্টর জমিতে।
গম কাটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন শোমসপুর ইউনিয়নের পদ্মবিলা গ্রামের কৃষক মোঃ হাসেম মোল্লা। তিনি বলেন, গমের বীজ বপনের পর খুব বেশি সেচ ও সার প্রয়োগ করতে হয় না। ফলে গম চাষে কম খরচে বেশি লাভবান হয় কৃষক। তিনি আরো বলেন, এবছর বিঘা প্রতি গম চাষে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। এবার বিঘাতে ১৫ থেকে ১৬ মন গম হওয়ার সম্ভবনা আছে। যা বর্তমান বাজার মূল্য ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিলে লাভের অংশ দাড়ায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।
উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, এবছর দুই একর জমিতে বারি ৩০,৩২ ও ৩৩ জাতের গম আবাদ করেছিলেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে।
শোমসপুর ইউনিয়নের পদ্মবিলা গ্রামের কৃষক মোঃ হাসেম মোল্লা। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এবছর বিনামূল্যে উন্নত জাতের গমের বীজ ও সার আমাদেরকে প্রদান করেছিলো। নিয়মিত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ তদারকি করেছিলন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, কৃষকদের উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ এবং ব্লাস্ট-প্রতিরোধী তাপমাত্রা সহিষ্ণু উন্নত বারি জাতের বীজ, সার এবং বিভিন্ন উপকরণ প্রদান করায় এ বছর গমের আবাদ বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গম কাঁটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিক সংকট হওয়ায় কম্বাইন হারভেস্টার সরকারি ভর্তুকি কৃষকদের দেয়া হয়েছে। হারভেস্টার মেশিন দিয়ে গম কাঁটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের খরচ ও শ্রম বাঁচে। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।