নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাট আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রভাষক মোঃ তৈয়ব আলী রাতে বৃষ্টির কারণে সেলুনে আশ্রয় নিতে গেলে, তখন তড়িঘড়ি করে নরসুন্দর ইয়াবা ট্যাবলেট লুকানোর সময় তিনি আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হন। এ সময়ে সেলুনে আসা ওই প্রভাষকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করেন। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ায় কলেজের অধ্যক্ষ ওই প্রভাষককে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। গত ১৭ মে মঙ্গলবার বালারহাট আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সরকার স্বাক্ষরিত কারন দর্শানোর নোটিশ ওই শিক্ষককে প্রদান করা হয় এবং নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত রবিবার (১৫ মে) রাতে উপজেলার বালারহাট বাজারের নিমাই চন্দ্র শীলের সেলুনের দোকানে আইন-শৃংখলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ২৬ পিস ইয়াবাসহ নরসুন্দর নিমাই চন্দ্র শীল (৪২) কে আটক করেন। ওই সময় বৃষ্টির কারণে সেলুনে আসা কলেজ শিক্ষক তৈয়ব আলী(৪০) কেও আটক করেন।
এ সময় স্থানীয়রা নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বালারহাট আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মোঃ হাছেন আলী কে ঘটনাস্থলে ডেকে আনেন। ঘটনাস্থলে আসার পর উপস্থিত সকল সাধারণ মানুষের নিকট সবকিছু শুনে, তিনি আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অনুরোধ করে ওই প্রভাষককে ছাড়িয়ে নেন। পরে আইন- শৃংখলা বাহিনী ইয়াবা সহ প্রকৃত দোষী নিমাইকে পুলিশে সোপর্দ করে। আটক নিমাই চন্দ্র শীল উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা বকুলতলা গ্রামের মৃত পোয়াতু চন্দ্র শীলের ছেলে এবং তৈয়ব আলী একই ইউনিয়নের কুরুষা ফেরুষা গ্রামের মৃত ময়নুদ্দিনের ছেলে।
তবে ছাড়া পাওয়া শিক্ষক তৈয়ব আলী জানান, ব্যক্তিগত কাজে অপেক্ষা করছিলাম। বৃষ্টি আসার কারণে সেলুনে অপেক্ষা করছিলাম। ঘরের ভেতর বৃষ্টির পানি পড়ায় সেলুনের মালিক ঝাপ ফেলে দেয়। এরমধ্যে বিজিবি এসে দোকান সার্চ করে দোকানের মেইনসুচের পিছন থেকে ইয়াবা বের করে। আমি এসব জানতাম না। আমার জীবনে এমন রেকর্ড নেই। অপেক্ষা করতে গিয়ে ফেঁসে গেছি।
বালারহাট আদর্শ স্কুল কালেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সরকার জানান, ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করাসহ একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হাছেন আলী জানান, প্রভাষক তৈয়ব আলী ইয়াবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তিনি অত্যন্ত ভদ্র ও সাদাসিধে। তিনি কখনো মাদক সেবন করেন না এবং এর সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। থানায় তার বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। মূলত বৃষ্টির কারনেই তিনি ওই দোকানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ অবস্থায় অভিযান শুরু হলে তিনিও অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আটক হন। আমার জানামতে তিনি নির্দোষ এবং সমাজের সম্মানিত একজন ব্যক্তি। তাই আইন শৃংখলা বাহিনীকে অনুরোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি জেলে যাক এটি কারো কাম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, প্রভাষক তৈমুর আলীর জায়গায় যদি বৃষ্টির কারণে আমিও একই ভাবে ওই দোকানে থাকতাম, তাহলে নিশ্চয়ই আমিও মাদকব্যবসায়ী হয়ে যেতাম না।
ফুলবাড়ী থানার ওসি ফজলুর রহমান জানান, ইয়াবা সহ আটক এক ব্যক্তিকে বিজিবি থানায় সোপর্দ করলে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।