একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সাথে যোগসাজেশে এদেশের স্বাধীনতা বিরোধীরাও ক্ষুণ, ধর্ষণ, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের মধ্যে অন্যতম হল বিহারী। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিহারীরা এদেশে নানা অপকর্ম করেছে। তেমনি একটি ঘটনা কুষ্টিয়া শহরের কোহিনূর ভিলা গণহত্যা। একাত্তর সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে স্থানীয় বিহারীরা কোহিনূর ভিলা পরিবারের শিশু, নারীসহ একই পরিবারের ১৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকা- অন্যান্য হত্যাকান্ডের চেয়ে আলাদা। রাতের অন্ধকারে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মম নির্যাতন শেষে জবাই করে হত্যা করে পরিবারের সবাইকে।
মুক্তিযুদ্ধে এই পরিবারের ত্যাগের ঘটনাকে সবার কাছে রক্ত বাড়ির ইতিহাস নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান করায় এই পরিবারের সবাইকে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধীরা। বাড়ির মালিক রবিউল হক মল্লিক ছিলেন একজন সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও দানশীল ব্যক্তি। তার বড় ছেলে আব্দুল মান্নান ছিলেন জয়বাংলা বাহিনীর সদস্য।
রক্তবাড়ির এই মর্মান্তিক ট্রাজেডি নিয়ে মাঠপর্যায়ে গবেষণা করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ইমাম মেহেদী। উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের তত্ত্বাবধানে এই গবেষণা কার্যক্রম শেষ করেছেন তিনি। ২০২১ সালে গণহত্যা নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালার ১০৬তম ও ১০৭তম গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে কোহিনূর ভিলা গণহত্যা। প্রকাশক ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আকাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট এর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র। ৭৭ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের মূল্য তিনশত টাকা। পাওয়া যাচ্ছে ২০২২ সালের অমর একুশে বইমেলার ৪৯০-৪৯৩ নম্বর স্টলে।