সমাবেশের নামে বিএনপি যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করে, তবে তারা ভুল করবে- উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর যদি খালেদা জিয়া সমাবেশ যোগ দেন, তাহলে আদালত ব্যবস্থা নেবেন।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘নারী পুলিশের গৌরবময় যাত্রা ও অর্জন ১৯৭৪-২০২২’ শীর্ষক বার্ষিক প্রশিক্ষণ সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
যদি সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া যোগ দেন, তাহলে তার জামিন বাতিল হবে কি না- সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আদালত ব্যবস্থা নেবেন।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি অনেক মানুষের সমাগম করবে। তাই তারা দুটি জায়গা চেয়েছিল। এর মধ্যে একটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, অন্যটি মানিক মিয়া এভিনিউ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সব ধরনের জনসমাগম হয়, আর মানিক মিয়া এভিনিউ আগে থেকেই সবার জন্য বন্ধ। সেখানে জাতীয় সংসদ, তাই সেখানে কাউকেই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, আমাদের ডিএমপি কমিশনার বিএনপির দাবির প্রতি লক্ষ্য রেখেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য অনুমতি দিয়েছেন। সেখানে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ছিল। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের কারণে সেই অনুষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
এখানে তো দুরভিসন্ধিমূলক বা বিশৃঙ্খল অবস্থার প্রশ্নই আসে না- যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা যেহেতু অনেক মানুষ নিয়ে আসবে, তাই যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে অনুষ্ঠানটি করতে পারে, সেজন্যই তাদের এই স্থান দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আপনাদের পার্টির (বিএনপি) সব কার্যক্রম অবশ্যই করবেন। কিন্তু আপনারা কোনোভাবেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবেন না এবং তার চেষ্টাও করবেন না। কারণ আমাদের বাংলাদেশ এখন একটি পর্যায় চলে গেছে, এগিয়ে চলছে। এখানে অহেতুক কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী কখনোই তা মেনে নেবে না।
বিএনপি চাচ্ছে না সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে, তারা চাচ্ছে নয়াপল্টনে করতে। এ বিষয়ে সরকারের বক্তব্য কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন নয়াপল্টনে রাস্তার অবস্থা। তারা যে রকম বলছে, লাখ লাখ লোকের সমাগম হবে। আর তারা যদি রাস্তায় সমাবেশ করে, তবে কী হবে- আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন। এসব বিষয় চিন্তা করেই তাদের বড় একটি জায়গা দেওয়া হয়েছে। এখন বিএনপি যদি না করে, তবে স্পষ্ট করে বলতে চাই, তারা যদি আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে, তবে ভুল করবে।
২৬ শর্তে আগামী ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে দেওয়া এক চিঠিতে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকেলে ডিএমপির পক্ষে পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া এই অনুমতিপত্র বিএনপি কার্যালয়ে পৌঁছে দেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কার্যালয় থেকে যাওয়ার পথে পার্টি অফিসের সামনে এই অনুমতিপত্র গ্রহণ করেন।