হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ
আসন্ন কোরবানির উপলক্ষে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ১৭’শ খামারিরা গবাদিপশুর মোটাতাজাকরণ করে কোরবানির জন্য প্রস্তুতি করেছে ১৬ হাজার ৭৫৩ টি কোরবানির পশু। কোরবানের আর মাত্র ১০ দিন বাকি থাকলেও উপজেলা স্থানীয় ৬টি বাজারে কোরবানির পশু তেমন বেচা কিনি না থাকায় অনেকটাই হতাশায় দিন পার করছে উপজেলার এসকল খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বলছেন স্থানীয় চাহিদা পূরণ করেও অর্ধেক কোরবানির পশু অন্যত্র চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা, পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও প্রান্তিক কৃষক খামারিরা অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় বাজারে ইজারাদাগণ জানাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার শোমসপুর পশু হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, বাজারে কোরবানিযোগ্য পশুর পর্যাপ্ত আমদানি থাকলেও ক্রেতা শূন্যতায় ভুগছে বাজার ইজারাদার। অপরদিকে খামারিরা রয়েছে হতাশাগ্রস্থ।
কোরবানির পশু মোটাতাজা করে চারটি গরু নিয়ে এসেছে নতুন উদ্যোক্তা কৃষক তাজুল ইসলাম। তিনি বললেন, অতিরিক্ত পশু খাদ্যের দাম ও দূরের বাজারে যাতায়াতের খরচ বেশি হওয়ায় পরম যত্নে লালিত ৬ টি গরু নিয়ে পড়েছে বিপাকে।
কোরবানির আগে পশু বিক্রি করতে না পারলে পথে বসতে হবে বলেও তিনি জানান। বৃহস্পতিবার সারাদিন বাজারে থাকলেও একটি গরু বিক্রি হয়নি। এমনকি গরু মোটাতাজা করণের খরচের অর্ধেক দামও দেইনি ক্রেতারা।
বরইচারা গ্রামের প্রান্তিক গরু মোটাতাজাকরণ কৃষক রেজাউল ইসলাম জানালেন, পিয়াজ ও অন্যান্য শস্য বিক্রি করে এবছর তিনটা গরু মোটাতাজাকরণ করেছি। পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও ছোট গরু ক্রয়ে বেশি টাকা হওয়াই এ বছর লাভের অংশ বেশি হবেনা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু বাজারে এসে দেখলাম কে তার শূন্যতা ও গরু বিক্রয় একেবারে না হওয়ায় লস করে গরু বিক্রয় করতে হবে। কোরবানির সামনে গরু বিক্রির আরও দুটি হাট থাকায় বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহিনা বেগম জানালেন গরু গরু মোটাতাজাকরণে কুষ্টিয়া খোকসা উপজেলা বরাবরই অগ্রপথিক। এ উপজেলায় ১ হাজার ৬৯৫ টি ছোট-বড় খামারি কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণ করেছেন ১৬ হাজার ৭৫৩ টি পশু।
এদের মধ্যে ষাঁড় গরু রয়েছে ৬ হাজার ৩১০ টি, গাভী ৩৩০ টি, বলদ গরু ৬৬ টি, ছাগল ৯ হাজার ৭৭০ টি, ভেড়া ২৫৫ টি ও মহিষ ২২ টি পশু।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে এ সকল মোটাতাজাকরণ পশুর মধ্যে অর্ধেকই উপজেলা বাসীর কোরবানির চাহিদায় লাগবে। বাকি অর্ধেক পশু কুরবানীর জন্য অন্যান্য জেলার চাহিদা পূরণ করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাংসের দাম বেশি ও ক্রেতাদের চাহিদা থাকায় কোরবানির পরেও খামারিরা মোটাতাজাকরণ পশুগুলো বিক্রয় করে লাভবান হতে পারবেন।