হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ
মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় দুটি উৎসবের ঈদের নামাজের স্থান ঈদগাহ ময়দান ও শেষ ঠিকানা কবরস্থানে যাওয়ার পথ নেই কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়ীয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও গোরস্তানের আওতাভুক্ত ৪ গ্রামের মানুষের । বর্ষা মৌসুমে এলাকার কারো মৃত্যু হলে তিন কিলোমিটার ঘুরে লাশ কবর দিতে নিতে হয় কবরস্থানে। আবার ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহ মাঠে যেতেও সমান বিড়ম্বনায় পরতে হয় এই অঞ্চলের মানুষের। এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা অনেকেই বেশ কয়েক বছর ধরে জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সাথে বসাবসি দেন-দরবার করেও রাস্তাটি নির্মাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, ঠিক তখন ঐ এলাকার দুই যুবকের উদ্যোগে সকল বাধা বিগ্নতা উপেক্ষা করে নির্মাণ হচ্ছে ঈদগাহ ও কবরস্তানে যাতায়াতের জন্য প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা।
গ্রামবাসীর সহযোগিতায় প্রায় দেড় কিলোমিটার মাটির রাস্তা নির্মাণ করছেন কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের দুই যুবক। ৫ টি গ্রামের আওতাভুক্ত আমবাড়ীয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও কবরস্তানে যাতায়াতের জন্য সোহান ও মিলন নামের দুই যুবকের উদ্যোগে নির্মাণ হচ্ছে রাস্তা।
এলাকার যুবকদের উদ্যোগে চাঁদা তুলে এলাকারবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে আমবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভায়া আমবাড়ীয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও কবরস্থান পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
বহুবছরের প্রত্যাশি কবরস্থানে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় বেশ উচ্ছ্বসিত বললেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
এলাকার কয়েকজন জমিদাতা বলেন, বর্ষা মৌসুমে হাটুপানি ভেঙে তিন কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে কবরস্থানে আসা মানুষের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ও পরকালে নাজাতে উসিলা হতে রাস্তা নির্মাণের জন্য জমি দিতে পেরে আত্মিক প্রশান্তির নিশ্বাস ছেড়েছি।
রাস্তা নির্মাণ কাজের দুই উদ্যোক্তা সোহানুর রহমান সোহান ও মোঃ মিলন হোসেন জানান, পূর্বে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময় রাস্তাটি নির্মান করার প্রতিশ্রতি দিয়েও কেউ কথা রাখেনি। দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধিদের কাছে চেষ্টা তদবির করেও কোন ফল না পেয়ে অবশেষে তাদের আশায় না থেকে যুবসমাজের উদ্যোগে শুরু করেছি রাস্তার কাজ। তবে কাজ শুরু করার আগে জমিদাতা ও এলাকার কিছু স্বার্থবাদী মানুষকে রাজি করাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে আমাদের। এখন সবার সহযোগিতা পেয়ে অনেক ভালো লাগছে।
ভবিষ্যতে আরও অনেক সামাজিক কাজে অংশ নিতে চাই আমরা।
এই রাস্তাটি নির্মাণে শুধু গোরস্তান বা ঈদগাহ মাঠে যাতায়াতের সুবিধা ছাড়াও মাঠের ধান-চালসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য ও মালামাল পরিবহনে কৃষকের যে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হতো তা লাঘব হবে। পরিশেষে এলাকার যুবসমাজের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় সেই সাথে ভবিষ্যতে অত্র এলাকার যুবসমাজ আরো অনেক সামাজিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।