বিএনপিকে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পঞ্চাশ বছর পরেও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো আস্ফালন করে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো সক্রিয়, তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে খুশি নয়। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির রক্ষাকবচ এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। এই অপশক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
তারা নানা সময় দেশের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, করোনার সময় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, এখন তারা দেশের মানুষকে নিয়ে মশকরা শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরস্থ এলজিইডি অডিটোরিয়ামে উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিতের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈন উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, আবুল কাশেম চিশতি, সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, মো. সেলিম, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ, কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপু প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমাদের দেশেও আমদানি নির্ভর কিছুপণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু সেটি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এতে নিন্মআয়ের মানুষের কষ্ট যাতে না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এক কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন। যাতে কম মূল্যে তারা টিসিবির পণ্য কিনতে পারেন। এতে জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু জনগণের মধ্যে স্বস্তি আসাতে বিএনপি ও কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী নামধারীর অস্বস্তি বেড়ে গেছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে গণহত্যা শুরু হয়েছিল, এটার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য আমরা দাবী জানিয়েছি, আমাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যৌক্তিক। কিন্তু যখন একটি দলের নেত্রী যিনি আবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি যখন বলেন আসলে ত্রিশ লক্ষ মানুষ মারা যায় নাই, তখন এই গণহত্যার স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহল প্রশ্ন করে। বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার এই ধরণের বক্তব্য এবং যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য বিএনপির প্রচেষ্টা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা। না হয় আমরা গণহত্যার স্বীকৃতি সহজে পেতাম। ’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র আজ। মানুষের মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ৬’শ ডলারের কাছাকাছি, যেটি ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ হয়েছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আশপাশের সবদেশে নেগেটিভ জিডিপি গ্রোথ ছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। আমাদের উপরে মাত্র দুটি দেশ ছিল সাউথ সুদান ও গায়ানা। তাদের অর্থনীতি আমাদের চেয়ে অনেক ছোট সেখানে জনসংখ্যাও অনেক কম। সেই বিবেচনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল পৃথিবীতে এক নাম্বারে আমরা বলতে পারি। ’
ড. হাছান বলেন, এতে দেশের মানুষ খুশি, সমস্ত পৃথিবী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, প্রধান অর্থনীতিবিদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্টসহ পৃথিবীর সবাই প্রশংসা করে, ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী এসে প্রশংসা করে গেছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা প্রশংসা করে, কিন্তু একটি পক্ষ প্রশংসা করতে পারে না। সেটি হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত এবং আর কিছু কিছু নামধারী বুদ্ধিজীবী। তারা এই উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা করতে পারেন না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করে যে বাংলাদেশকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল সেদেশকে ধ্বংসস্তুপ থেকে পুনর্গঠিত করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যদি হত্যা না করা হতো তাহলে সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বঙ্গবন্ধু অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন, সেই হারে যদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে থাকত, তাহলে স্বাধীনতার ১৫/২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হত একটি উন্নত রাষ্ট্র।
সূত্র : বাসস