গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী এলাকায় চাঞ্চল্যকর ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সভাপতি বাদশা মিয়া হত্যা মামলায় পলাতক প্রধান আসামি পাপুল মিয়া’কে রাজধানীর লালবাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং অপহরন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ, বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
২। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ০৮ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ২২:০৫ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার লালবাগ থানাধীন শহীদগর এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার মামলা নং-২৩ তারিখ-২৬/০৯/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৩০২/ ৫০৬/৩৪ দÐ বিধি; চাঞ্চল্যকর গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানাধীন ০৬ নং বেদকাপা ইউপি সদস্য ও ০৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাদশা মিয়া হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি মোঃ পাপুল মিয়া (৩০), পিতা-মোঃ মোসলেম উদ্দিন ভোলা, সাং-পূর্ব নয়ানপুর, থানা-পলাশবাড়ী, জেলা-গাইবান্ধা’কে গ্রেফতার করে।
৩। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামি পাপুল মিয়া উক্ত এলাকায় মাদক সেবন, জুয়া খেলা, চুরি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম করে আসছিল। ভিকটিম বাদশা মিয়া উক্ত এলাকার ইউপি সদস্য হওয়ায় পাপুলকে একাধিকবার ভালো হওয়ার জন্য উপদেশ প্রদান করে। যার কারণে পাপুলর বাদশা মিয়ার প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ২৬/০৯/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ২৩:৪৫ ঘটিকায় উল্লেখিত পলাশবাড়ী থানাধীন পূর্বনয়ানপুর এলাকায় আসামি পাপুল ও তার অপর ২/৩ জন সহযোগীরা মিলে মাদক সেবন করে। তা দেখে উল্লেখিত এলাকা ও বাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে নিয়োগকৃত নৈশ্যপ্রহরীগন পাপুলসহ তার অন্যান্য সহাযোগীদের মাদক সেবন করতে নিষেধ করলে তাদের মধ্যে একপ্রকার বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। অতঃপর তাদের তর্ক-বিতর্ক শুনে উক্ত এলাকার ইউপি সদস্য ভিকটিম বাদশা মিয়াসহ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তাদেরকে যার যার বাড়ীতে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এতে আসামি পাপুল পূর্ব ক্ষোভের জের ধরে বাদশা মিয়ার উপর উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং একপর্যায় পাপুলর সাথে থাকা অন্যান্য সহযোগীরা বাদশা মিয়াকে ঝাপটে ধরে এবং পাপুল তার প্যান্টের পকেটে থাকা চাকু দিয়ে বাদশা মিয়ার পাজরে স্বজরে দুইবার ছুরিকাঘাত করে। অতঃপর বাদশা মিয়াকে বাঁচানোর জন্য তার দুই ভাতিজা স্বপন মিয়া ও সবুজ মিয়া এগিয়ে আসলে পাপুল তাদেরকেও এলোপাথারি ছুড়িকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। উক্ত ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন বাদশা মিয়া ও তার দুই ভাতিজাকে গুরুতর আহত অবস্থায় অটোরিক্সাযোগে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদশা মিয়াকে মৃত ঘোষনা করেন।
৪। উক্ত হত্যাকান্ডের পর মৃত বাদশা মিয়ার মেয়ে মোছাঃ স্বপ্না খাতুন (২৫) বাদি হয়ে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানায় আসামি পাপুল মিয়াসহ ০৬ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর থেকে হত্যাকাÐে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। ইতোমধ্যে হত্যাকাÐের ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল।
৫। হত্যাকাÐের ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত চাঞ্চল্যকর গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী এলাকার ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাদশা মিয়া হত্যাকাÐে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত হত্যাকাÐে জড়িত প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।