গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলায় আরও চারজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে এবং এরপর থেকে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন শতাধিক ফিলিস্তিনি। স্থানীয় সময় রোববার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, রোববার গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ১১৬ জন নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভূখণ্ডজুড়ে একাধিক এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ছয় ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ফলে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন ৪৯০ জনেরও বেশি মানুষ।
আনাদোলু বলছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার পূর্ব খান ইউনিসের আল-ফারহিন এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একজন নারী নিহত এবং আরও দুইজন আহত হয়েছেন বলে একটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে। দক্ষিণ গাজার রাফাহতেও ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে আরেক ফিলিস্তিনি নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন এবং উত্তরের শহর বেইত হানুনে ড্রোন হামলায় আরও দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের বাহিনীর কাছাকাছি কাজ করছে এমন সন্দেহভাজনদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির ছয় সপ্তাহের প্রথম পর্যায় গত শনিবার মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। তবে গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার বিষয়ে রাজি হয়নি ইসরাইল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বিনিময়ে কিছু না দিয়ে বা চুক্তির সামরিক ও মানবিক বাধ্যবাধকতা পূরণ না করে যতটা সম্ভব ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির জন্য প্রাথমিক বিনিময় পর্ব বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন।
তবে হামাস এই ধরনের কোনও শর্তের অধীনে অগ্রসর হতে অস্বীকার করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মেনে চলতে হবে এবং অবিলম্বে দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য আলোচনা শুরু করতে হবে, যার মধ্যে গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসানের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।