বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এখন যে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে তাতে প্রতিদিন অন্তত ১০০ ট্রাক ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর এএফপি’র।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস এ তথ্য জানান।
গ্রিফিথস বলেন, ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করতে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের উন্নয়নে জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থাসহ (ইউএনআরডব্লিউএ) গাজা উপত্যাকায় প্রায় ১৪ হাজার কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। কিন্তু চলতি সপ্তাহে চারটি বোমা হামলার পর ফিলিস্তিনের রাফাহ ক্রসিং বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে সিনাই মরুভূমিতে কয়েক টন ত্রাণ আটকা পড়ে আছে।
এর আগে ত্রাণ সামগ্রী পাঠাতে ইসরায়েল রাজি হওয়ার পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ২০ ট্রাক ত্রাণ সহায়তা ঢুকতে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে মিসর। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে কথা বলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ তথ্য জানান।
ইসরায়েল সফর শেষে দেশে ফেরার পথে বাইডেন বলেন, ত্রাণ সহায়তা সরবরাহের জন্য মিসরের প্রেসিডেন্ট গাজা সীমান্তের রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছেন। টেলিফোনে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি গাজার বেসামরিক লোকজনের জন্য ত্রাণ সরবরাহের জন্য রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি।
এছাড়াও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাইডেন বলেন, আশা করছি শুক্রবারের মধ্যেই রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ সামগ্রীবাহী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ করবে। প্রথম দিন ২০টি ট্রাককে প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় এখন যে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে তাতে এই ২০ ট্রাক ত্রাণ সহায়তা দিয়ে ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব নয়। গাজার ১০ লাখ উদ্বাস্তুর জন্য দৈনিক অন্তত ১০০ ট্রাক ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। জবাবে গাজা ভূখণ্ডে বিমান ও বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই দিনই গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে ইসরায়েল। দু’দিন পর পুরোপুরি গাজা অবরোধের ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল সেখানে খাবার, পানি, ওষুধ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ব্যাপক ধ্বংসের কারণে মানবিক বিপর্যয়ে পড়ে উপত্যকার জনগণ। এই অবস্থায় বন্ধ করে দেয়া হয় রাফাহ ক্রসিং। যে কারণে গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণ-সহায়তা আসা বন্ধ হয়ে যায়। মিসর সীমান্তে অন্তত ২০০ ট্রাক ত্রাণবাহী অপেক্ষা করে আছে।