গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠি হামাস। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে হামাস জানিয়েছে, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের তারা এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে।
তবে যুদ্ধবিরতি কতদিনের হবে বা গাজায় জিম্মি ইসরায়েলিদের বিষয়ে বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।
হামাস নেতারা বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত এখন ইসরায়েলের কোর্টে।
হামাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া টেলিফোনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল থানি এবং মিশরের গোয়েন্দা বিভাগের মন্ত্রী আব্বাস কামেলকে জানিয়েছেন, তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধবিরতিতে হামাস রাজি।
রোববার দক্ষিণ গাজার রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছের একটি এলাকা থেকে কেরেম শালোম এলাকায় ১০টি রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এতে তিন সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
হামাসের সশস্ত্র শাখা এই হামলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে তাঁরা রকেট হামলা চালিয়েছে। তবে কোথা থেকে ওই হামলা চালানো হয়েছে, তা নিশ্চিত করেনি।
হামাসের এ হামলার পর পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গত রোববার ইসরায়েলের একাধিক হামলায় অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ শিশু। এ ছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ এলাকায় বড়সড় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। এ জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, রাফাহর পূর্বাঞ্চলে থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থল অভিযান সামনে রেখে এই স্থানান্তর বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। গাজার উত্তরাঞ্চলে অভিযান শুরুর পর থেকে মিশর সীমান্তের কাছে অবস্থিত দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ১৫ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নেয়।
রাফাহ শহরে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে আকাশ থেকে ফেলা হচ্ছে চিরকুট। সেসব চিরকুটে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। এ ছাড়া মোবাইলে কল দিয়ে ও এসএমএস পাঠিয়ে নিরাপদ করিডোরে সরে যেতে বলা হয়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এর পর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও স্থাপনার নিচে পড়ে থাকা হাজার হাজার মরদেহ হিসাবের বাইরে থেকে যাচ্ছে। শুধু হাসপাতালে পৌঁছানো মরদেহের ভিত্তিতে হতাহতের পরিসংখ্যান দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।