চট্টগ্রামের বিখ্যাত খান পরিবারের সন্তান তামিম ইকবাল খান। অবিসংবাদিতভাবে বাংলাদেশের সেরা ওপেনারও। টাইগারদের দেশসেরা এই ওপেনার এবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে তৃপ্তির এক উপহার দিলেন ঘরের মাঠকে। ১৬২ বলে আশিথা ফার্নান্দোর বলকে লেগে ঠেলে দিয়েই নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ১০ম সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম।
এই সেঞ্চুরিতে নিজের ওপর থেকেও চাপ নামালেন তামিম। ব্যাটিংয়ে দারুণ ধারাবাহিক হলেও কেন জানি সেঞ্চুরিটাই ধরা দিচ্ছিলো না তার ব্যাটে। দীর্ঘ ২৬ মাসের বেশি সময় পর সাদা পোশাক গায়ে চাপিয়ে ম্যাজিক ফিগারের স্বাদ পেলেন তিনি।
তামিম মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যান ৮৯ রান নিয়ে, সেখান থেকে ফিরেই সেঞ্চুরির কোটা পূর্ণ করেন। প্রথম পঞ্চাশ করতে ৭৩ বল, লাগলেও পরের পঞ্চাশ করতে লেগেছে ৮৮ বল। ১৬২ বলের তামিমের এই শতকে কোনো ওভার বাউন্ডারি নেই, বাউন্ডারি মেরেছেন ১২টি।
চট্টগ্রাম টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে যেন রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর মাহমুদুল হাসান জয়। তৃতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত খেলতে থাকা এই জুটি ৬২ মাস পর বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন শতরানের উদ্বোধনী জুটি।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৬২ রান। সাগরিকায় দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে শ্রীলঙ্কান বোলারদের শাসন করেছেন দুই ওপেনার তামিম আর জয় মিলে। ব্যক্তিগত ৫৮ রানে ফার্নান্দোর বলে জয় আউট হলে ১৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে বাংলাদেশের।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর তামিম সেঞ্চুরি পেলেও ফিরে গেছেন অন্য ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। তৃতীয় সেশনে নেমে রমেশ মেন্ডিসের করা প্রথম ওভারটি দেখেশুনে খেললেও পরের ওভারেই অঘটনটি ঘটে। ডানহাতি পেসার আশিথার লেগ স্ট্যাম্পের উপরের খাটো লেংথের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৫৮ রানে ফিরে গেছেন তিনি।
এদিকে টেস্ট ক্যারিয়ারের নিজের ১০ম শতকের পাশাপাশি এ সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিকও হয়ে গেছেন তামিম। চট্টগ্রাম টেস্ট খেলতে নামার আগে ৬৫ টেস্ট ক্যারিয়ারে তামিম ইকবালের রান ছিল ৪৮৪৮। আর ৮১ টেস্টে ৪৯৩২ রান নিয়ে তার চেয়ে ৮৪ রানে এগিয়ে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের মালিক ছিলেন মুশফিকুর রহিম। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০০ রান নিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে তামিমের রানসংখ্যা ৪৯৫৮। ব্যক্তিগত ৮৫ রানের সময় মুশফিককে পেছনে ফেলে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক হন তিনি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বিকেলে শেষ সেশনে ১৯ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৬ রান তুলে দিন শেষ করে টাইগারদের দুই ওপেনার তামিম-জয়। কাল যেখানে শেষ করেছিলেন আজ যেন সেখান থেকেই শুরু করেন দুজনই।
নিজের ঘরের মাঠ সাগরিকা, তার ওপর উইকেটের সহায়তা পেয়ে সকাল থেকেই চালিয়ে খলতে থাকেন তামিম। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন তামিম। অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসকে বাউন্ডারি মেরেই ৩২তম টেস্ট ফিফটি করেন ৭৩ বলে।