আজ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। ইতিহাসের জঘন্যতম, নৃশংস হত্যাকাণ্ড যা গোটা বাঙালি জাতিকে কলঙ্কিত করেছিল। ঘাতকের নির্মম বুলেট বিদ্ধ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বুক।
অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু ঘাতকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েও খুনিদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ‘তোরা কী চাস? আমাকে কোথায় নিয়ে যাবি?’ বঙ্গবন্ধুকে দেখেও হাত কাঁপেনি খুনিদের।
একে একে গুলি করে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের, কর্নেল জামিল।
খুনিদের বুলেটে সেদিন আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খান।
ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্রের যে কোনও অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
স্বাধীন বাংলাদেশে কোনও বাঙালি তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে না বলে দৃঢ়বিশ্বাস করতেন বঙ্গবন্ধু। সেজন্য তিনি গণভবনের পরিবর্তে থাকতেন ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসভবনে। যে বাড়িটি বাঙালির স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে অসম্ভব প্রিয় ছিল বঙ্গবন্ধুর। এখানে থেকেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে সর্বশক্তি নিয়ে ব্রতী ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমদ বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। পরে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটিকে আইন হিসেবে অনুমোদন দেন।
এই খুনি জিয়া খন্দকার মোশতাক দের দেশবিরোধী কার্যক্রম হাসিল করার জন্যই বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ওপর ঘাতকদের নজর পড়ে। যা আজও চলমান। তবে সেদিনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা তার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে যেদিন ও প্রত্যয় ব্যক্ত করে যাচ্ছেন তা পৃথিবীতে বিরল। তাই এই শোকের মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি বাংলাদেশে জনগণের কাছে দোয়া এবং আশীর্বাদ চেয়ে এবং নৌকার পক্ষে জনগণের আস্থা রাখা ও নৌকার পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে, বাঙালি জাতির রাখাল রাজা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শেষ করছি । জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় হোক মেহনতী মানুষের।
লেখকঃ এম. তমিজ উদ্দিন ভূ্ঁইয়া সেলিম। সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি।