প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর মৃতদেহের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুন্দরবনের কটকাসহ বিভিন্ন নদ-নদী ও চর থেকে ১০০ বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বনকর্মীরা। এসব মৃত বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে ৯৬টি হরিণ ও ৪টি বন্য শূকর।
সুন্দরবনে ৩৬ ঘণ্টা ধরে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আঘাতে মারা যাওয়া এসব বন্যপ্রাণী মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীর মৃতদেহগুলো ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো গণমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল শুরুতেই সুন্দরবনের ওপর তাণ্ডব চালায়। ওই সময়ে ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জলোচ্ছ্বাসে ডুবে ছিল সুন্দরবন। দীর্ঘসময় ধরে সুন্দরবন জলমগ্ন থাকায় হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর শাবক বেশি মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, কটকা, কচিখালী, শেলারচর, নীলকমল ও নারিকেলবাড়িয়া এলাকা থেকে মৃত ৯৬টি হরিণ ও ৪টি বন্যশূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও ১৮টি জীবিত হরিণ ও একটি অজগর সাপ। এই ১৮টি হরিণসহ এর আগে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা আরও ১৭টি হরিণকে চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এখনো বনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানায় বন বিভাগ।
এদিকে, সুন্দরবনে ৫০টি পুকুরে লোনা পানি ঢুকে গেছে। বিভিন্ন বন বিভাগের স্টেশন অফিসে ওঠা-নামার জন্য কাঠের জেটি ক্ষতি হয়েছে ৩০টি। টহলফাঁড়িতে ওয়ারলেস যোগাযোগের জন্য ২০টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া স্টেশন অফিসে রাস্তাঘাট, ল্যাম্প পোস্ট, রান্নাঘর, বন্যপ্রাণী আশ্রয় নেয়ার জন্য নির্মিত টিলা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
সব মিলিয়ে সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগে অবকাঠামগত ক্ষতি হয়েছে ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকা, আরও জানান মিহির কুমার দো।