গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার নিজের প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক মামুন মোস্তাফী মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
৮২ বছর বয়সী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বুধবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
ডা. জাফরুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর কিডনি সমস্যার পাশপাশি লিভারের সমস্যাও দেখা দেয় তার। এ ছাড়া তিনি অপুষ্টিসহ সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন।
১৯৮২ সালে তার উদ্যোগে জাতীয় ওষুধ নীতি ঘোষণা করা হয়। এ অবদানের জন্য জানুয়ারি মাসে লন্ডন ভিত্তিক সংগঠন ‘ব্রিটানিয়া ইকোনমিকাল সাপোর্ট ট্রাস্ট’ থেকে সম্মাননা পান তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে দীর্ঘ ৫১ বছর দেশের গরিব অসহায়দের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শিক্ষা, চিকিৎসা, গরিবদের সাহায্যের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি করে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়েছেন।
ডা. জাফরুল্লাহর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে। বাবা-মাযের দশ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়।
ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট উত্তীর্ণের পর তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরীর শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন। হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী কলকাতা ও ঢাকার কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী।