পালটা মামলা দিয়েছেন ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমার নায়িকা ইয়ামিন হক ববিও। এর আগে ববিসহ দুজনের বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশে চুরি, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা হয়। সেখানে ববির সহযোগী মির্জা আবুল বাশারকে ১ নম্বর এবং ববিকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায়ই পালটা মালা দেন তারা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই আনোয়ার হোসাইন বলেন, গুলশানের ২ নম্বরে ১১৩ নম্বর সড়কে ওয়াইএন সেন্টারের ‘ভুবন’ নামের একটি রোস্তোরাঁ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এই মামলা ও পালটা মামলা হয়েছে।
গুলশান থানার এসআই জানান, ওয়াইএন সেন্টারের ‘ভুবন’ নামের রোস্তোরাঁ ফ্লোরের মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, তার ছেলে জাওয়ান আল মামুনসহ ৭ জন ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে ববি ও বাশার এ পালটা মামলা করেন।
তিনি বলেন, গত ২৩ জুন ববির সহযোগী মির্জা আবুল বাশারকে (৩৪) এক নম্বর এবং ববিকে দ্বিতীয় আসামি করে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়েছে। গুলশানের ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এসআই আনোয়ার হোসাইন বলেন, এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা যাবে না, যেহেতু এটি তদন্তাধীন।
ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম সাকিবের করা মামলায় বলা হয়েছে, হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করিয়া সাধারণ ও গুরুতর জখম, চুরি, ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধ। এ ঘটনায় ওয়াইএন সেন্টারের ক্ষতির পরিমাণ দেড় লাখ টাকা ও চোরাই এক লাখ টাকা যা এখনো উদ্ধার হয়নি।
এসব নিয়ে কথা বলতে নায়িকা ববির মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তবে বাশার বলেন, ববি এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন।
ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা বলেন, তাদের কাছ থেকে আমান উল্লাহ আমান নামের এক ব্যক্তি ‘ভুবন’ নামের একটি রেস্তোরাঁ ভাড়া নেন। আমান পরে ওই ব্যবসায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ববি ও বাশারও যুক্ত করেন।
আমান বলেন, আমরা পোষাতে না পেরে মূলত রেস্তোরাঁটি ছেড়ে দিতে চাই। তখন ববি ও বাশারের সঙ্গে রেস্তোরাঁর আসবাবপত্রসহ অন্যান্য বাবদে ৫৫ লাখ টাকার দাম ঠিক করা হয়। সবকিছু তারা কিনে নেন। এরপর ববি ও বাশার ২৫ লাখ ও ১৫ লাখ টাকার দুটো চেক দেন এবং আরও ১৫ লাখ টাকা দেবেন বলে জানান। কিন্তু তাদের কাছ থেকে পাওয়া দুটো চেকই ডিজঅনার হয়। ফলে আমরা কোনো টাকা পাইনি।
ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা বলেন, রেস্তোরাঁর ভাড়া বকেয়া থাকার কারণে আমানের কাছে ভাড়া চাইলে আমান একসময় আমাদের তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে ভাড়া নিতে বলে এবং জানায় যে এরপর থেকে ববি ও বাশার এটি পরিচালনা করবে।
সাকিব অভিযোগ করেন, আমরা এক মাসের ভাড়া হিসেবে মে মাসের আড়াই লাখ টাকা পেয়েছি ববি ও বাশারের কাছ থেকে। আড়াই লাখ টাকার যে রশিদ তাদের দিয়েছিলাম, সেটি নকল করে একই রশিদ নম্বরে তারা ৭ লাখ টাকার আরেকটি ভুয়া রশিদ তৈরি করে। যেখানে লেখা ছিল ওয়াইএনসি কর্তৃপক্ষ আরও সাত লাখ টাকা বুঝে পেয়েছে। এটি মিথ্যা, আমরা বুঝতে পারি ববি ও বাশার লোক ভালো না।
ওই ফ্লোরের মালিকের অনুমতি নিয়ে আমান গত ২৩ জুন রেস্তোরাঁ তালাবন্ধ করে দেন সাকিব।
তিনি বলেন, নতুন তালা লাগানোর পর বাশার গাড়ি নিয়ে ফটক ভাঙে। ভেতরে এসে ম্যানেজার জয়নালসহ আমাদের লোকদের ভয়ভীতি দেখায়। অনেকের গায়েও হাত দেয়।
সাকিব বলেন, ববি আমাকে থাপ্পড় মারে এবং বাশার আমাকে ঘুষি মারে। বাশারের হাতে আংটি ছিল, এতে আমি রক্তাক্ত হই। বুঝতে পারি যে পেশীশক্তি খাটিয়ে রেস্তোরাঁ দখল করতে চায় বাশার।
তিনি বলেন, তখন আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা নিয়েছি। পুলিশ আসার পরে আমরা মামলা করেছি।