মেট্রোরেল প্রকল্পের উদ্বোধন হওয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ সংগঠনটির ঢাবি ও বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা রাজনৈতিক অপশক্তিকে প্রতিহত করতে এবং আগামী দিনে আবারও আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনতে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিএনপির ডাকা আগামীকালের গণমিছিলের নামে কোন অস্থিরতা তৈরি করা হলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এই মেট্রোরেলের উদ্বোধন অপশক্তির বুকে জ্বালা দেয়। আগামীকাল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দিন। এর আগে আজকে আমরা মেট্রোরেল উদ্বোধন করে আনন্দ শোভাযাত্রা করছি। কিন্তু ওরা আগামীকালকে সারা ঢাকা শহরে নৈরাজ্যের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ওরা আগামীকাল নাকি সারা ঢাকা শহরে গণমিছিল করবে। কিন্তু গণমিছিলের নামে যদি গণ হয়রানির চেষ্টা করা হয় তাহলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। যে হাত আগামীকাল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে সেই হাত ঢাকা শহরের মানুষ ভেঙে ফেলবে।
মেট্রোরেল উদ্বোধনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক দর্শনের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ উল্লেখ করে ইনান বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক দর্শনের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ বলে আমি মনে করি। পদ্মা সেতু নিয়ে কত গুজব ছড়ানো হয়েছে। প্রথমে বলা হলো জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। কিন্তু পদ্মা সেতু কি জোড়া তালি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে? বরং এটি সারা পৃথিবীর বুকে ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রাকচারের একটি রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে তারা বলে মেট্রোরেলের নাকি ভাড়া বেশি। কিন্তু এই মেট্রোরেলের কারণে ঢাকা শহরের মানুষের দৈনিক চার ঘণ্টা কর্মসময় সেইভ হবে। আপনারা বলেন মানুষের অর্থনৈতিক গতিশীলতা কমবে কিন্তু সারা বিশ্ব বলে বাড়বে। সুতরাং আপনাদের মনে অসৎ উদ্দেশ্য আছে; কালিমা আছে। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই পতাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহু কষ্টে সারাটি জীবনে গণমানুষের জন্য সংগ্রাম করে রচিত করেছেন। তার রচিত এই লাল সবুজের পতাকার কোন একটি অংশে যদি কালিমা লেপনের চেষ্টা করা হয় তাহলে বাংলাদেশে ছাত্রলীগ এক চুলও ছাড় দেবে না।
সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, মেট্রোরেল যেমন ঢাকা শহরের লাইফ লাইন ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যা হচ্ছেন বাংলাদেশের লাইফ লাইন। ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি উন্নত বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ১৮২৪ মার্কিন ডলার কিন্তু এটা ২০৪১ সালে সাড়ে ১২ হাজার মার্কিন ডলারে উপনীত হবে। বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট সেটি ২০৪১ সালে ৫৬ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছাবে। বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় নেমে আসবে। জিডিপি ৭ শতাংশ থেকে গিয়ে ৯ শতাংশে দাঁড়াবে। স্মার্ট বাংলাদেশের এই স্বপ্নকে নিরাপদ করতে হবে এবং আগামী দিনে আমরা যদি বঙ্গবন্ধু কন্যার ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আরও অনেক অসীম সোনালি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য অপেক্ষা করছে।
রাজনৈতিক অপশক্তির বিষ দাঁত ভেঙে দিতে তরুণ প্রজন্মকে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও আমাদের পবিত্র মসজিদ-মন্দিরকে এরা ব্যবহার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে। আমাদের নিজেদের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এদের বিষ দাঁত যাতে আমরা উপড়ে ফেলতে পারি সেই শপথ আমাদের গ্রহণ করতে হবে।