নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও ছেলেসহ জড়িতদের হিজরতের ব্যয়ভার বহন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই অভিযোগে সোমবার ভোররাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জামায়াত আমির তার ছেলে ডা. রাফাত নতুন জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়েছেন এটা জেনেও সমর্থন দিয়ে গেছেন। পরে রাফাত সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’য় জড়ানো অনেকেই শিবিরের সাথী ও কর্মী ছিলেন। তাদের হিজরতের খরচও দিয়েছেন জামায়াত আমির। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির একটি দল।
তিনি বলেন, গত ৯ নভেম্বর জামায়াত আমিরের ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারও আগে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’য় জড়িয়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য সিলেট থেকে হিজরত করা তিন জঙ্গি সদস্যকে যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডা. রাফাতকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার ডা. রাফাত আগে ছাত্র শিবির করতেন। যাদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি তারা সবাই ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য হিজরত করেছিলেন। তারা প্রত্যেকেই শিবিরের সাথী ছিলেন। সহযোগী আরিফও শিবিরের সাথী ছিলেন। জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’য় যোগ দেয়ার আগে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন। এরপর নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র দাওয়াত পেয়ে দলসহ যুক্ত হন তিনি।
তিনি বলেন, ডাক্তার রাফাতের নেতৃত্বেই প্রথম সিলেট থেকে ১১ জন সিলেট থেকে বান্দরবানে হিজরত করেন। সেখানে কুকিচিনে নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। ডা. রাফাতের মতো বড় সহযোগী ও সংগঠক তাহহিয়াত। তাহহিয়াতের নেতৃত্বে অনেকে হিজরত করেন। তিনি কুকিচিনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ছেলেসহ ১১ জনকে ডা. শফিকুর রহমান খরচ দিয়ে কুকিচিনে পাঠিয়েছিলেন। এসব কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডাক্তার শাকের নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছি কয়েকদিন আগে। তিনি নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র দাওয়াতি শাখার প্রধান ছিলেন। এই সংগঠন থেকে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিকভাবে অনেক সহযোগিতাই তারা পেতেন। যারা ডা. রাফাতের সঙ্গে হিজরত করেছেন তারাও জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সঙ্গে জামায়াতের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা ও সমর্থন ছিল কিনা তা জানতে এবং এই মামলায় জামায়াত আমিরের সরাসরি সম্পৃক্ততার কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করেছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে ছেলেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করেছেন জামায়াত আমির। আরও কয়েকজনকে তিনি সহযোগিতা করেছেন। আমরা এসব বিস্তারিত জানার জন্য তার রিমান্ড চেয়েছি।