বিশেষ প্রতিনিধি: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১(মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) আসনে সকালে মায়ের কবরস্থান জিয়ারত করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান।
মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইনের কাছে আব্দুর রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন তাঁর সহধর্মিনী ডা. মির্জা নাহিদা হোসেন বন্যা। এর আগে বোয়ালমারী পৌরসদরের ৫০০ আসন বিশিষ্ট অডিটরিয়াম চত্বরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে এক বিনিময় সভায় মিলিত হন আব্দুর রহমান। এছাড়া বেলা ২টায় আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী উপজেলায় সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আব্দুর রহমানের পক্ষে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
এ আসন থেকে আরো মনোনয়ন জমা দিয়েছেন-বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর, জাতীয় পার্টির আকতারুজ্জামান খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কেএম নুরুল ইসলাম শিকদার, জাকের পার্টির আব্দুর রউফ মোল্যা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রীক। ফরিদপুর-১ আসনে বিভিন্ন দল থেকে মোট ৭জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডেন্ট মেম্বার আব্দুর রহমান বলেন: জনগণের ভোটে এমপি হতে চাই, কারচুপি বা ভোট কেন্দ্র দখল করে নয়। আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানো।
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগে মতবিনিময় সভায় আব্দুর রহমান বলেন, আমার আগমনে আপনাদের শতস্পর্ত ভালোবাসা পেয়ে আমি গর্বিত। আমাকে শেখ হাসিনা আবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি সেই সুযোগের এতটুকু অপব্যবহার না করি সেই জন্যও আপনারা সহযোগিতা করবেন। এজন্য আমি আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে এখন তাদের ঘরেই আগুন লেগেছে। নানান নামে নানান কাজে এখন তারেকের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ ঘোষণা হয়েছে। বিভিন্নজন বিভিন্ন কায়দা কৌশলে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন। এমনকি যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন তাদেরও স্বাগত জানাই। নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার জন্য সকলকেই স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনটা অংশ গ্রহণ মূলক নির্বাচন হোক এটা আমাদের চাওয়া। আমি আপনাদের সামনে কথা দিলাম; আমি ভোট কেন্দ্র দখল করে এমপি হতে চাই না, ভোটের কারচুপি করে এমপি হবো না। আমার জন্য আপনারা কেউ কোন ভোট চুরি বা কেন্দ্র দখল করতে যাবেন না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তার প্রমাণ আমার আসনে বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। শেখ হাসিনা সরকারের গত ১৫ বছরের উন্নয়ন, সুশাসন ও সেবার ওপর আস্থা রেখে এই নির্বাচনেও জনগণ নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন আশা করছি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুজ্জামান মিন্টু উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল, পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী,নাসির মো:সেলিম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক আ. রশিদ, আলফাডাঙ্গা পৌর মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু, বোয়ালমারী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, যুগ্ম আহবায়ক দাউদুজ্জামান,রকি চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম, নবাব উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কামরুল শিকদার,মৎস্যজিবিলীগের আহবায়ক রাজিবুল ইসলাম রাজু, ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তুজা আলী তমাল, সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে।
সহকারী রির্টানিং অফিসার ও বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন জানান, ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।