জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠান। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১১ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। পাশাপাশি তৃণমূল সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখায় জেলা পর্যায়ের ৬৪ জন গুণী সাংবাদিককে ১ লাখ করে টাকা ও বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় ১১ জনের প্রত্যেককে পুরস্কার হিসেবে আড়াই লাখ টাকা, সম্মাননা স্মারক এবং সনদপত্র দেওয়া হয়। আট বিভাগ থেকে আটজন প্রবীণ সাংবাদিককে মঞ্চে ডেকে নিয়ে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা স্মারক, ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেওয়া হয়। আগামী বছর থেকে ২৫ জন সাংবাদিককে দেওয়া হবে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। পুরস্কারের মান হবে ১০ লাখ টাকা করে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত সোমবার সরগরম হয়ে ওঠে আইসিসিবি। বিকাল থেকে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। সন্ধ্যা নাগাদ মুখর হয়ে ওঠে পুরো আইসিসিবি প্রাঙ্গণ। বর্ণাঢ্য আয়োজনের পর নৈশভোজে অংশ নেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আগামী বছর ২৫ জন অনুসন্ধানী সাংবাদিককে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। তাদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে ১০ লাখ টাকা। প্রতি বছরই এই আয়োজন করবে বসুন্ধরা গ্রুপ। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মানোন্নয়নের সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ গণমাধ্যমের উদ্যোগ গ্রহণের পর সাংবাদিকের মান উন্নয়ন হয়েছে।
বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, বসুন্ধরার সুযোগ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উদ্যোগে সারা দেশ থেকে প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিকদের সম্মানিত করতে পেরে আমরা গর্বিত। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করার এই পদক্ষেপ দেশের নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদেরকে অনুপ্রাণিত করবে। এই আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। তিনি আরও বলেন, কালের কণ্ঠ পত্রিকার মধ্য দিয়ে আমরা মিডিয়া জগতে পা রাখি। তারপর একে একে সাতটি মিডিয়া হাউস খুলেছি। বাংলাদেশ প্রতিদিন বাংলাদেশের এক নম্বর পত্রিকা, সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। সবার হাতে হাতে পত্রিকাটি দেখা যায়। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করছি, যিনি না হলে আজকে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুর কারণে আজকে দেশে সাংবাদিকতায় সমৃদ্ধি পেয়েছে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সত্যকে সত্য বলবেন, মিথ্যাকে মিথ্যা। আমাদের পত্রিকা প্রকাশনার উদ্দেশ্যই ছিল সত্য তুলে ধরা। দেশের অগ্রযাত্রায় ব্যবসায়ীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ব্যবসায়ীদের নিয়ে সমালোচনা করার আগে অবশ্যই তাদের অবদান স্বীকার করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো অন্যায় জুলুমের শিকার না হন, সেদিকে আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আমরা সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এমন একটি আয়োজন করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের পুরস্কার দেওয়ার জন্য। আমি বিশ্বাস করি, এই ধরনের পুরস্কার প্রদান অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করবে। গুণী সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম উপকৃত হবে। সাংবাদিকরা সমাজকে সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে যে ভূমিকা পালন করতে পারেন, অন্যান্য পেশার মানুষ তা পারেন না।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের বিকাশ হয়। সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যা সমাজকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দিতে এবং অবহেলিত দিকগুলোতে সমাজের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে যেভাবে ভূমিকা রাখে, অন্য কোনো পেশার মানুষ তা পারে না।