সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি : খেলার মাঠে জয় পরাজয় বড় কথা নয় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে হবিগঞ্জ জেলার মেলবন্ধনে আবদ্ধ হতে পেরে আমি আনন্দিত। কালীগঞ্জের মানুষের ভালোবাসার কাছে আমি হেরে গেলাম। আজ আমি আমার ফুটবল একাডেমী নিয়ে খেলতে এসে ভালোবাসার বন্ধনে আত্মীয়তা তৈরি করে গেলাম। আমি আমার নিজের জেলার মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পায়নি সেটা কালীগঞ্জের মানুষ আমাকে দিয়েছে। আমি কালিগঞ্জবাসীর কাছে ভালোবাসার চির কৃতজ্ঞে আবদ্ধ হয়ে চির ঋণী হয়ে গেলাম। সাতক্ষীরার মানুষকে আমি আজ থেকে আত্মীয়তার বন্ধনে বেধে ফেলেছি। অনেকে ছেলেমেয়ে বিয়ে দিয়ে আত্মীয়তা তৈরি করে কিন্তু সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের মানুষ আমাকে এবং আমার একাডেমীকে যে ভালোবাসা দিয়েছে সেটা মরে গেলেও ভুলতে পারবো না। আমি বাংলাদেশের ফুটবল এবং যুব সমাজকে সামনে এগিয়ে নিতে চাই তাই আমি নিজের অর্থায়নে নিজের হবিগঞ্জ জেলায় একটি ফুটবল একাডেমী তৈরি করেছি। আমার নিজ অর্থে ফুটবল একাডেমি ছাড়াও বহু মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি।
জনপ্রতিনিধি বা কোন রাজনৈতিক নেতা না হয়েও যে মানুষকে অনেক সাহায্য সেবা করা যায় সেটা আমি নিজে করে দেখেয়েছি। আমি সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলি কাজ করি। সাতক্ষীরার মানুষ আজ থেকে আমার পরিবারের সদস্য এই জেলার কোন মানুষ বিপদে পড়লে আমার দরজা সব সময় খোলা থাকবে। আমি ফেসবুক থেকে যে টাকা আয় করি সেটা দিয়ে আমার একাডেমি সহ সাধারণ মানুষকে সহায়তা করি একইভাবে আমি সাতক্ষীরার মানুষকে পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সাহায্য করতে চাই। তাদের এই ভালোবাসার ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারবোনা। এলাকার অনেক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সংসদ সদস্য সহ রাজনীতি করতে এসে মুখে শুধু এলাকার উন্নয়ন করে যায় প্রকৃত অর্থে তারা জনগণের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করে। আসুন এলাকা থেকে মাদক মুক্ত যুব সমাজ গড়তে এবং যুব সমাজকে রক্ষা করতে খেলাধুলার মাঠে ফিরিয়ে আনি। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের মানুষের ভালোবাসা নিয়ে আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে এবং রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম আলিম আল রাজি টোকনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকাল ৩টার সময় রতনপুর ফুটবল ময়দানে চেয়ারম্যান আহমদ আলী ফুটবল একাদশ বনাম হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমীর সঙ্গে এক প্রীতি ফুটবল খেলায় ব্যারিস্টার সুমন তার বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম আলিম আল রাজী টোকনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খেলা উদ্বোধন করেন এবং বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ সদস্য এস, এম জগলুল হায়দার, কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার নরিম আলী মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক ও তারালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী প্রমূখ। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাবিব ফেরদৌস শিমুল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দিপালী রানী ঘোষ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহমুদা খাতুন মেধা, ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গাজী শওকত হোসেন ছাড়াও এলাকার সুধী সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
খেলার উদ্বোধক হিসেবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন মাদককে না বলে খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমি রতনপুর ফুটবল মাঠের উন্নয়নের জন্য ১ লক্ষ টাকা এবং রতনপুর ক্লাবের জন্য ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করলাম। সংসদ সদস্য এস,এম জগলুল হায়দার তার বক্তব্যে বলেন রতনপুর খেলার মাঠ উন্নয়নের জন্য এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা ঘোষণা করেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী তার বক্তব্যে বলেন মাঠের উন্নয়নের জন্য মাটি ভরাটের টাকা সহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। বর্তমান চেয়ারম্যান এম আলিম আল রাজি টোকনের পিতা এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আহমাদ আলীর নামে টুর্নামেন্ট এর ব্যবস্থা করায় আমরা এলাকাবাসী গর্বিত ও ধন্য মনে করছি।
শনিবার রতনপুর মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ফুটবল ক্রীড়া মোদী দর্শকরা দুপুর থেকে মাঠে আসা শুরু করে তাদের প্রিয় দল ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির সঙ্গে আহমদ আলী ফুটবল একাদশের খেলা দেখার জন্য মাঠে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। বিকাল সাড়ে ৩টার সময় খেলা শুরু হওয়ার আগে ক্রীড়া মোদী দর্শকরা মাঠে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে এবং ব্যারিস্টার সুমনার সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পরে অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘাটিয়ে তীব্র উত্তেজনা নিয়ে মাঠে খেলা শুরু হয়। খেলা শুরুতেই দুই দলের খেলোয়াড়রা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণের মধ্যে খেলা চলতে থাকে। খেলার প্রথমার্ধে ১৫ মিনিটের সময় সুমন একাডেমীর ৭ নাম্বার জার্সিধারী খেলোয়াড় রকিব ১টি গোল করে দলকে এগিয়ে নেয় দ্বিতীয়ার্ধে ১২ মিনিটের সময় আহমদ চেয়ারম্যান ফুটবল একাদশের ৯ নম্বর জার্সিধারি খেলোয়াড় জাহিদ একটি দর্শনীয় গোলে গোল পরিশোধ করে খেলায় সমতা আনে। বাকি সময় কোনপক্ষেই গোল না করতে পেরে অমীমাংসিতভাবে খেলা শেষ হয়। পরে দুই দলের অধিনায়ক চেয়ারম্যান এম আলিম আল রাজি এবং ব্যারিস্টার সুমন জয় পরাজয় বড় কথা নয় দুই জেলার মেলবন্ধনে খেলাটি অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। আবারো যাহাতে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের মানুষ হবিগঞ্জ যেয়ে সুমন একাডেমীর মাঠে একত্রিত হয়ে মেলবন্ধন সদূর প্রসারিত হয় সেই প্রত্যাশা রেখে ব্যারিস্টার সুমন এর আমন্ত্রণে সমাপ্তি ঘটে।