২ রা জুন,২০২৪, রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯৩৩ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বি সি এস এডুকেশন ক্যাডার এর সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক সহকারী অধ্যাপক বাবু রণজিৎ মল্লিক।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মডেল কলেজ এর সহকারী অধ্যাপক ও খুলনা বেতার এর সনামধন্য সংবাদ পাঠক জনাব মোঃ এ টি এম আসাদুজ্জামান।
সেমিনারে গেস্ট অফ অনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা এর প্রভাষক জনাব মো: মুস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক ও হাজীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মোঃ মাসুদ আহমেদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকার ও নাট্যব্যক্তিত্ব সন্দীপন কুমার বিশ্বাস, জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু, শাকিব হোসেন, মায়া আক্তার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা ছিলেন একজন সুবিবেচক মানুষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পি এইচ ডি গবেষক বাবু রণজিৎ মল্লিক বলেন ,বঙ্গবন্ধু নিজেই একটি ইতিহাস ।শুধু ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু উঠে আসেননি,তিনি গড়ে তুলেছেন একটি ইতিহাস।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে জাতীয়তাবাদের বাক বদল হয়েছে ।জাতীয়তাবাদের চেতনা প্রথমত দুইটি পর্বে সন্নিবেশিত রয়েছে ।বাঙালি জাতির ইতিহাসে প্রথম পর্বটি হচ্ছে ব্রিটিশ শাসন আমলের জাতীয়তাবাদ এবং পরবর্তীটি হল ৪৭ পরবর্তী দেশ বিভাগ হওয়ার পরের জাতীয়তাবাদ। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে ৪৭ পরবর্তী সময়ে ২৪ বছরের জাগরণের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে জাতীয়তাবাদ সফল হয়েছে এবং আমরা পেয়েছি স্বাধীন দেশ ।জাতির জীবনের ইতিহাসের ৪৭ এর পর যে মহিমান্বিত সময় গড়ে উঠেছে তার গঠক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি আরো বলেন , প্রত্যেকের উচিত বঙ্গবন্ধুর জীবনকে জানা ।এতে রাষ্ট্র দর্শন এর জ্ঞান আমরা লাভ করব ।বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা করেছেন তা তাকে বিশ্বনেতায় আসীন করেছেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনাব এ টি এম আসাদুজ্জামান বলেন , বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন অত্যন্ত সুবিবেচক মানুষ । তৎকালীন সময়ে আরব – ইসরায়েল যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়েছিলেন এবং দুই লক্ষ টন চা পাতি পাঠিয়েছিলেন। যা একটি মুসলিম দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ সাহায্য ছিল।বঙ্গবন্ধু যে বিশ্ব নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এ থেকে তার প্রমাণ মিলে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাকবে আজীবন।
অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার জনাব মোঃ মুস্তাফিজর রহমান বলেন ,বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী নেতা। বঙ্গবন্ধুর দূরর্দশী নেতৃত্বের কারণে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে রোল মডেল এ বাংলাদেশ রূপান্তরিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী মানুষের ভোগান্তির অবস্থা থেকে স্বাভাবিক সমাজ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশেষ অবদান রাখেন।
অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ জনাব মোঃ মাসুদ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ।একটি ভূখণ্ডের নায়ক ।বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে ছিলেন , গণতন্ত্রের প্রতি ছিল তার অগাধ শ্রদ্ধা ।বঙ্গবন্ধু সারা জীবন স্বস্তিতে ছিলেন না। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন।
বঙ্গবন্ধু বলতেন, “একটা বুলেট আমাকে তাড়া করছে ”
এই বুলেটটি হল যারা শোষক তাদের বুলেট। যারা ক্ষমতাকে শোষণের জন্য অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তাদের বুলেট।তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য তাড়া করেছিল এবং তাদের ষড়যন্ত্রেই বঙ্গবন্ধু হত্যা হয়েছে।
স্বাধীনতার ভাষণের পর বঙ্গবন্ধু বলেন , “আমার ডাকে সাড়া দিয়েছে আমার সোনার ছেলেরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে , তারা আমার নির্দেশনায় অস্ত্র জমা দিয়েছে। ”
এইখানে প্রকাশ পায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি বাঙালি জাতির শ্রদ্ধা।
তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য নানা গণমাধ্যম এবং বৈদেশিক শক্তি নানা ভাবে তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে । বঙ্গবন্ধুকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছে কিন্তু কেউই বঙ্গবন্ধুকে দমিয়ে রাখতে পারেনি শেষ পর্যন্ত। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে কিন্তু তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে পারেননি ।আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে একটি উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন যেখানে জ্ঞানীরা নির্দ্বিধায় জ্ঞান চর্চা করতে পারবেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উন্নত নাগরিকে পরিণত হতে পারবে।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক প্রশান্ত কুমার সরকার।