৬ ই জুলাই, ২০২৪, শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯৬৬ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক বি সি এস এডুকেশন ক্যাডার এর সদস্য বাবু রণজিৎ মল্লিক।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক চৌধুরী।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মাসুদ আহমেদ।
সেমিনারে গেস্ট অব অনার হিসেবে যুক্ত ছিলেন জনাব মোঃ মনির হোসেন কামাল, স্টেশন ম্যানেজার, লোক বেতার, বরগুনা।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিশিষ্ট নারী উদ্যোগক্তা পারভীন আক্তার ও নাঈমা ফেরদৌস, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো: মেহেরাজ হোসেন।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু, শাকিব হোসেন ও সাদিয়া হালিমা।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা চাকচিক্যে বিশ্বাস করতেন না এবং তার ইন্টিগ্রিটি প্রশ্নাতীত।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক পি এইচ ডি গবেষক বাবু রণজিৎ মল্লিক বলেন, বাংলাদেশ নামক গণতান্ত্রিক জাতিসত্তার পরিচয় প্রতিষ্ঠা করে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাজমহল দেখে বলেছিলেন – তোমার চিত্তের চেয়ে তুমি যে মহৎ।
বঙ্গবন্ধুকে দেখে বলতে পারি- তিনি স্রষ্ঠা এবং সৃষ্টি হিসেবে শ্রেষ্ঠ। শেখ মুজিবুর রহমান একটি বুদ্ধিভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য পদক্ষেপ নিয়ে গিয়েছিলেন। রেনেসাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বাংলাদেশ গঠনের পরে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কাজী নজরুল ইসলামকে দেশে আনেন এবং সাংস্কৃতিকভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির জন্য তাকে জাতীয় কবি হিসেবে মর্যাদা দান করেন এবং নাগরিকত্ব প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কাঠামো গঠন করে গিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন যে আদর্শ সেই মতবাদ তিনি প্রচার করেছেন। যা ভাববেন তা তাই জনতার মধ্যে ছড়িয়ে দিতেন। যা জনতা মন্ত্রের মতো গ্রহণ করত। বঙ্গবন্ধু যে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তা তিনি কখনো ভঙ্গ করেননি। কৃষক শ্রমিকদের জন্য রাজনীতি করতেন। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস “মুজিব বাদ” একটি বই লিখেছিলেন যার মাধ্যমে মুজিব আদর্শ নিয়ে নানা চর্চার জায়গা তৈরি হয়েছে।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মাসুদ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্বি সত্ত্বা এবং স্বদেশী মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন।তিনি আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন । শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্বত্তা ছিল দেশের শোষিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তার জন্য কাজ করা,কৃষক শ্রমিক দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য কাজ করা অধিকার আদায় করার জন্য তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গিয়েছেন । বিশ্ব ভ্রমণকালীন সময়ে বিশ্বে মানবাধিকারের কথা বলে গেছেন।
সেমিনারের গেস্ট অব অনার জনাব মোঃ মনির হোসেন কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে যে পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছে আমরা সেই পথে চলবো। কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে বর্তমানে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় সচেতনামূলক বার্তা দ্রুততার সাথে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো আদর্শে স্বেচ্ছাসেবক মূলক কাজ করে যাব।
বিশিষ্ট নারী উদ্যোগক্তা
নাঈমা ফেরদৌস বলেন, ১৯৭১ সালের ৩রা ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদের এর পক্ষে যুদ্ধে যোগদান করে। ফলশ্রুতিতে পূর্ব ও পশ্চিম- দুই ফ্রন্টে আরেকটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূচনা ঘটে। উপর্যুপরি বিমান হামলা ও বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর তৎপরতায় এক সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাসের এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বিশ্বের সপ্তম-জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে বদলে দেয়। আঞ্চলিক সম্পর্কের কারণে যুদ্ধটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যে চলমান স্নায়ুযুদ্ধের অন্যতম প্রধান পর্ব হিসেবে পরিগণিত হয়। জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্র ১৯৭২ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার মিসেস সাদিয়া হালিমা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির জনক,পথপ্রদর্শক, মুক্তিদাতা ও একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। বঙ্গবন্ধু এসব পরিচয় ছাপিয়েও ছিলেন বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিত্ব।
জানিপপ এর আরেক ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার জনাব মোঃ শাকিব হোসেন বলেন, ৬ জুলাই ১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “আওয়ামী লীগ নীতিতে বিশ্বাসী।”
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক কুমার সরকার।