২০ ই জুন, ২০২৪, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯৫০ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মাসুদ আহমেদ।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার ও বাংলাদেশ স্টাডিজ এর পি এইচ ডি গবেষক ও বি সি এস এডুকেশন ক্যাডার এর সদস্য বাবু রণজিৎ মল্লিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা জনাব মোঃ মেহেরাজ হোসেন।
সেমিনারে আলোচকবৃন্দ হিসেবে যুক্ত ছিলেন, বিশিষ্ট নারী উদ্যোগক্তা মিসেস পারভীন আক্তার, জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু ও শাকিব হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা সর্বাগ্রে জনস্বার্থকে বিবেচনায় নিতেন।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মাসুদ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। পাকিস্তানের সম্পদ বন্টনে বাঙালির ভাগ্য পরিবর্তন হতো না। তা বঙ্গবন্ধু খুব ভালো করেই জানতেন। তাই তিনি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। জনবান্ধব আইন করেন যেখানে গণতন্ত্রের ভিত্তিতে সব বন্টন হবে এবং নির্বাচন হবে। স্বাধীন দেশে মুজিবুর রহমান সমাজতান্ত্রিক এবং গণতন্ত্রের সমন্বয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশের একটি সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বলেন, বাঙালি জাতির সাহস এবং ধৈর্যের যে সমস্যা সেটা হল চিকিৎসার অভাব, আত্ম নিয়ন্ত্রণের অভাব, স্বাধীনতার অভাব আর গণতন্ত্রের অভাব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই অভাবের জায়গা গুলোকে সুন্দর করে গঠন করতে চেয়েছেন। শোষিতের রাজনীতি করতে চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ সময় জেল খেটেছেন স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে। স্বাধীন দেশে যখন মানুষ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে দুটি মানুষ সারারাত জেগে দিনের পর দিন শুধু বাঙালির মঙ্গলের কথা ভেবে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বেগম মুজিব তার পাশে ছিলেন ছায়ার মত যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির কথা চিন্তা করতে পারে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার এই ত্যাগের আদর্শ ধারণ করেই আমরা জীবন যাপন করবো।
সেমিনারের প্রধান অতিথি পি এইচ ডি গবেষক বাবু রণজিৎ মল্লিক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর ছিলেন একটি জাতি রাষ্ট্রের কারিগর। রাজনৈতিক দর্শনে সীমাবদ্ধ ছিলেন না ।তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের মুক্তি যেখানে অনেক কঠিন হয়েছিল, সেখানে বিশ্ব নেতা মার্কিন লুথার কিং ফিদেল ক্যাস্ট্রো, নেলসন ম্যান্ডেলা তাদের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কোন পার্থক্য নেই। বরং তাদের থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছিল বেশি চ্যালেঞ্জিং নেতৃত্ব – পাকিস্তান পূর্ববর্তী একটি নেতৃত্ব, পাকিস্তান কালীন একটি নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরের নেতৃত্ব।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিকল্পনা করে এগিয়েছিলেন রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্থিতিশীল করতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি সময়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য আন্দোলন করেন। তিনি সংখ্যা গরিষ্ঠের নেতা ছিলেন, মানবতাবাদী নেতা ছিলেন আর অসাম্প্রদায়িক নেতা ছিলেন।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি জনাব মোঃ মেহেরাজ হোসেন বলেন , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষিত লাঞ্ছিত মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। আট বছর চার মাসের অধিক সময় তিনি কারাবরণ করেছিলেন বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দেওয়ার জন্য।
সেমিনারে উপস্থিত মিসেস
পারভিন আক্তার বলেন, জাতির পিতা সবসময় অসহায় আর মেহনতী মানুষের কথা চিন্তা করেছেন এবং তাদের পাশে দাঁড়াতেন। আমরাও জাতির পিতার এই আদর্শকে অনুসরণ করে অসহায় ও মেহনতী মানুষের পাশে দাঁড়াবো।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন সংগ্রাম করে আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, তেমনি আমাদের সংগ্রাম করে নিজেদের রক্ষা করতে হবে এবং পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করতে হবে।
জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থতাকেও হার মানিয়েছেন বাঙালির মুক্তির জন্য।
জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার মো: শাকিব হোসেন বলেন, ১৯৭৫ সালের ২০ জুন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে খাদ্যশস্যের সুষ্ঠু পরিবহনের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য স্থল ও নৌবাহিনী নিয়োগ করেছিলেন।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক প্রশান্ত কুমার সরকার।