কয়েকদিন আগে ফাঁস হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি কিছু গোপন তথ্যের নথি। যা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। সবশেষ আরো এক গুরুতর তথ্য সামনে এসেছে। সেটা হলো, রাশিয়া ইস্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ওপর নজরদারি করছিলো ওয়াশিংটন।
আল জারির প্রতিবেদন মতে, ফাঁস হওয়া নথি বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর জাতিসংঘ মহাসচিবের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখছিলো জো বাইডেন প্রশাসন। কারণ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর মস্কোর ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের মনোভাবকে ‘নরম’ বলে মনে হয়েছে ওয়াশিংটনের কাছে।
ফাঁস হওয়া নথিতে মহাসচিব গুতেরেস ও সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তার মধ্যকার ব্যক্তিগত কথোপকথনের বিষয়টি এসেছে। যে কথোপকথন মূলত হয়েছিলো ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার শস্য রফতানি চুক্তি নিয়ে।
মার্কিন নথি মতে, ওই চুক্তিকালে জাতিসংঘ প্রধানকে রুশ স্বার্থ রক্ষায় বেশি ইচ্ছুক বলে মনে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। একটি নথিতে বলা হয়েছে, ‘গুতেরেস রাশিয়ার রফতানি সক্ষমতা বাড়ানোর যে প্রচেষ্টা তার ওপর জোর দিয়েছেন। এমনকি সেক্ষেত্রে যদি নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত বা অনুমোদিত কোনো রুশ সংস্থা বা ব্যক্তির সাথে কাজ করতে হয়।’
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন সংঘাতের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দেয়। যার মোকাবিলায় গত বছরের জুলাই মাসে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় একটি শস্যচুক্তিতে সম্মত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেন।
নথি অনুসারে, রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষায় গুতেরেস চুক্তি নিয়ে এতটা উৎসাহী ছিলেন। মস্কোর রফতানি সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছিলেন তিনি। পেন্টাগনের মূল্যায়ন, গত বছর জাতিসংঘ প্রধানের কার্যকলাপ ইউক্রেনে অভিযানের কারণে মস্কোকে চাপে রাখার ব্যাপারে পশ্চিমের বৃহত্তর প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
এদিকে নথি ফাঁস ও তাতে জাতিসংঘ মহাসচিবের ওপর নজরদানি করার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষদের ওপর যুদ্ধের প্রভাব কমানোর জন্য তারা কাজ করেছেন। খাদ্যের দাম কমানো ও সার পৌঁছে দিতে যা যা করা দরকার তারা করবেন।
তবে আন্তোনিও গুতেরেসকে নিয়ে আমেরিকার এ ধরনের ব্যাখ্যায় স্পষ্টতই অসন্তুষ্ট জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, রাশিয়ার যুদ্ধের বিরুদ্ধে গুতেরেসের বিরোধিতা খুবই স্পষ্ট।
সূত্র: আল জাজিরা ও বিবিসি।