ঢাকা , রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন অপরিহার্য: মিয়া নূরউদ্দিন আহাম্মেদ অপু নির্বাচনের তফসিল কবে, জানালেন ইসি আনোয়ারুল একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার চিন্তা করছে সরকার জামগড়া আর্মি ক্যাম্পের রাতভর অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার তিনজন রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলা যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত ন্যায়বিচার সবার জন্য, তবু গ্রামীণ দরিদ্ররা এখনো বঞ্চিত বিএনপি পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এটাই আমাদের নেতার নির্দেশ: এম এ মালিক ডিজিটাল কোর্ট ও অনলাইন বিচার: স্বচ্ছতার নতুন দিগন্ত না নতুন সংকট? কাপ্তাইয়ে পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে বৃহৎ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ভিত্তিহীন, তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা: উপাচার্য

সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিনিধি।। 

সিটি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক কাজি নেয়ামুল হকের করা সংবাদ সম্মেলনকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, “এটি একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অপচেষ্টা, যাদের উদ্দেশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংস্কার ও সিটি কলেজের নানাবিধ অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওঠা তদন্ত কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা।”
মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা সিটি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী নেয়ামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর হঠাৎই এদিন রাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহকে জড়িয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন সিটি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক কাজী নেয়ামুল হক। যে সংবাদ সম্মেলনটি নজরে এসেছে জাতীয় উপাচার্যেরও।

এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করে বাংলা৫২নিউজ ডট কমকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় উপাচার্য ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক নির্দেশনার আলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা আর কোনো কলেজের গভর্নিং বডিতে থাকতে পারবেন না। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দেশের আরও প্রায় ২০টি কলেজে গভর্নিং বডির সদস্যপদে থাকা ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাই একটি মহলকে ক্ষিপ্ত করেছে। আর তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।”

তিনি আরও জানান, সিটি কলেজে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন। ওই তদন্ত থামাতেই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

“সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংস্কার চলছে”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “আমরা দেশের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডি পুনর্গঠন করেছি। এতে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই ঘুষ বা অনৈতিক লেনদেনের কোনো অভিযোগ আসেনি। কোনো প্রিন্সিপাল নিয়োগ বা বদলির ক্ষেত্রেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা আমি নিজে জড়িত নই, এমনকি কেউ অভিযোগ প্রমাণও করতে পারবে না।”

তিনি জানান, “কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে শিক্ষা নয়, বরং ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে কাজ করছেন। তাদের সম্পর্কে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সচেতন এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভুয়া ভাইভা, সাজানো প্রক্রিয়া
সিটি কলেজে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করেও প্রশ্ন তোলেন উপাচার্য। তার দাবি, “একজন মাত্র প্রার্থীকে ভাইভা নেওয়া হয়েছে, এটি ছিল পুরোপুরি সাজানো একটি প্রক্রিয়া। এই বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ওই নিয়োগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।”

“আন্দোলনের নামে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা”
ড. আমানুল্লাহ আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের চেতনার নাম ভাঙিয়ে কিছু মানুষ সমাজের বিভিন্ন স্তরে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছে এবং এসব কার্যকলাপ নজরদারিতে রয়েছে।”

তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনি কাঠামো রয়েছে এবং এছাড়া বিষয়টি নিয়ে আইন উপদেষ্টা ও আমাদের অভিভাবক শিক্ষা উপদেষ্টা আছেন-তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও সুনাম রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে,” বলেন উপাচার্য।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৪:০১:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
৫৯৪ Time View

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ভিত্তিহীন, তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা: উপাচার্য

আপডেটের সময় : ০৪:০১:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিনিধি।। 

সিটি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক কাজি নেয়ামুল হকের করা সংবাদ সম্মেলনকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, “এটি একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অপচেষ্টা, যাদের উদ্দেশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংস্কার ও সিটি কলেজের নানাবিধ অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওঠা তদন্ত কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা।”
মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা সিটি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী নেয়ামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর হঠাৎই এদিন রাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহকে জড়িয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন সিটি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক কাজী নেয়ামুল হক। যে সংবাদ সম্মেলনটি নজরে এসেছে জাতীয় উপাচার্যেরও।

এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করে বাংলা৫২নিউজ ডট কমকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় উপাচার্য ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক নির্দেশনার আলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা আর কোনো কলেজের গভর্নিং বডিতে থাকতে পারবেন না। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দেশের আরও প্রায় ২০টি কলেজে গভর্নিং বডির সদস্যপদে থাকা ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাই একটি মহলকে ক্ষিপ্ত করেছে। আর তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।”

তিনি আরও জানান, সিটি কলেজে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন। ওই তদন্ত থামাতেই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

“সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংস্কার চলছে”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “আমরা দেশের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডি পুনর্গঠন করেছি। এতে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই ঘুষ বা অনৈতিক লেনদেনের কোনো অভিযোগ আসেনি। কোনো প্রিন্সিপাল নিয়োগ বা বদলির ক্ষেত্রেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা আমি নিজে জড়িত নই, এমনকি কেউ অভিযোগ প্রমাণও করতে পারবে না।”

তিনি জানান, “কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে শিক্ষা নয়, বরং ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে কাজ করছেন। তাদের সম্পর্কে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সচেতন এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভুয়া ভাইভা, সাজানো প্রক্রিয়া
সিটি কলেজে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করেও প্রশ্ন তোলেন উপাচার্য। তার দাবি, “একজন মাত্র প্রার্থীকে ভাইভা নেওয়া হয়েছে, এটি ছিল পুরোপুরি সাজানো একটি প্রক্রিয়া। এই বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ওই নিয়োগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।”

“আন্দোলনের নামে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা”
ড. আমানুল্লাহ আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের চেতনার নাম ভাঙিয়ে কিছু মানুষ সমাজের বিভিন্ন স্তরে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছে এবং এসব কার্যকলাপ নজরদারিতে রয়েছে।”

তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনি কাঠামো রয়েছে এবং এছাড়া বিষয়টি নিয়ে আইন উপদেষ্টা ও আমাদের অভিভাবক শিক্ষা উপদেষ্টা আছেন-তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও সুনাম রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে,” বলেন উপাচার্য।