কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত পাল্টাল জাতীয় পার্টি। দলটির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আগামীকাল বুধবারই শপথ নিতে যাবেন।
জাতীয় পার্টির (জাপা) পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুরেই আগামীকাল শপথ নিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সন্ধ্যায় দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা বুধবার শপথ নেবেন। পূর্ব ঘোষিত বৃহস্পতিবারের সভা বাতিল করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ১০ টার মধ্যে জাতীয় সংসদ ভবনের বিরোধী দলীয় উপনেতার কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির নবনির্বাচিত সকল সংসদ সদস্যকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন বুধবার। এদিন সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদের শপথকক্ষে তাঁদের শপথ পড়াবেন একাদশ সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মঙ্গলবার দুপুরে জাপার একটি সূত্র জানিয়েছিল, দলটির পক্ষ থেকে স্পিকারকে একটি চিঠি দিয়ে বুধবার শপথ নিতে না যাওয়ার বিষয়টি জানানো হবে।
দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকার বাইরে রয়েছেন। তিনি ঢাকায় ফিরলে দুই-একদিনের মধ্যে দলীয় বৈঠক করে শপথ নেওয়ার দিন-তারিখ ঠিক করা হবে। বিষয়টি জানিয়ে স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সন্ধ্যায় জাপা নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শপথ নিতে যাওয়ার বিষয়টি জানায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় গত রোববার। ভোটে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। এই আসনগুলোর মধ্যে তারা ১১টিতে জয়ী হয়।
একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির আসনসংখ্যা (সংরক্ষিত নারী আসন বাদে) ছিল ২৩টি। বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার জয়ী হয়েছেন।
এই চার জ্যেষ্ঠ নেতার বাইরে প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২) নির্বাচিত হয়েছেন।
৭ জানুয়ারি ভোট শেষে জি এম কাদের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে পরদিন তিনি বলেন, নির্বাচন ‘সঠিক’ হয়নি। এটি সরকারের ইচ্ছানুযায়ী একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন ছিল। এই সরকারকে কেউ বিশ্বাস করবে না, সরকারের গ্রহণযোগ্যতা যেটা ছিল, সেটাও থাকবে না।
এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন ৬২ জন। তাঁদের মধ্যে ৫৮ জন আওয়ামী লীগের নেতা।
ফলে সংসদে বিরোধী দল কে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। স্বতন্ত্ররা জোট করে বিরোধী দল হতে পারে, এমন সুযোগ আইনে রয়েছে। এর ফলে জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের অবস্থানও হারাতে পারে।