Friday , 19 April 2024
শিরোনাম

জান্নাতের প্রথম নাশতা

মুফতি আবুল কাসেম:মানুষের আশার শেষ নেই। প্রতিনিয়ত কত আশা করে সে। কত স্বপ্ন বুকের মধ্যে লালন করে। কিন্তু কিছু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।

রূপ পায় না বাস্তবে। কিছু স্বপ্ন মরে যায় বুকের ভেতর। কিছু স্বপ্ন আহত হয়ে পড়ে থাকে মনের গহিনে। দুনিয়ায় তার সব আশা পূরণ হবে না। বরং জান্নাতেই তার সব আশা পূরণ হবে। সেখানে তার কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ থাকবে না। থাকবে না সেখানে সুখ-শান্তির অন্ত। আরাম-আয়েশের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সব কিছুই থাকবে সেখানে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর সেখানে (জান্নাতে) আছে, তোমাদের কাঙ্ক্ষিত এবং চোখ-জুড়ানো সব কিছু। তোমরা সেখানে চিরকাল বসবাস করবে। আর এই যে তোমরা জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছ। এটা তোমাদের কর্মের ফল। ’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ৭১-৭২)
জান্নাত যেমন অকল্পনীয়, তেমনি তার নিয়ামতও হবে অকল্পনীয়। প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা (হাদিসে কুদসিতে) বলেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তু তৈরি করে রেখেছি, যা কখনো কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি, যা সম্পর্কে কোনো মানুষের মনে কোনো ধারণাও জন্মেনি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭০২৪)

জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের মাছের কলিজা দিয়ে নাশতা দেওয়া হবে। সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এরই মধ্যে এক ইহুদি পাদ্রি এসে বলল, ‘আসসালামু আলাইকা ইয়া মোহাম্মদ’ তখন আমি তাকে এমন জোরে ধাক্কা দিলাম যে সে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো। (ধাক্কা খেয়ে) সে আমাকে বলল, তুমি আমাকে ধাক্কা দিলে কেন? আমি বললাম রাসুলুল্লাহ (সা.) না বলে ‘ইয়া মোহাম্মদ’ বললে কেন? ইহুদি বলল, আমি তো তাঁকে সেই নামেই ডেকেছি তাঁর পরিবার যে নাম রেখেছে। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমার পরিবারের লোকেরা আমার নাম মোহাম্মদই রেখেছেন। এরপর ইহুদি বলল, আমি আপনাকে কয়েকটি প্রশ্ন করতে এসেছি। জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, আমি তোমার জিজ্ঞাসিত বিষয় সম্পর্কে জানালে তোমার কী লাভ হবে? সে বলল, তা মনোযোগসহ শুনব। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মাটিতে দাগ কাটতে কাটতে বললেন, তোমার যা জিজ্ঞাসা করার জিজ্ঞাসা করো। ইহুদি বলল, যেদিন আকাশ ও জমিনকে পরিবর্তন করা হবে (কিয়ামতের দিবসে) সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা সেদিন পুলসিরাতের কাছে একটি অন্ধকার স্থানে থাকবে। কারা সর্বপ্রথম তা পার হবে? রাসুল (সা.) বলেন, দরিদ্র মুহাজিররা। ইহুদি আবারও প্রশ্ন করল, তারা জান্নাতে প্রবেশ করার পর সর্বপ্রথম তাদের কী দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে? তিনি বলেন, মাছের কলিজা। ইহুদি পুনরায় প্রশ্ন করল, এরপর তাদের কী খাবার পরিবেশন করা হবে? তিনি বলেন, তাদের জন্য জান্নাতে পালিত ষাঁড় জবাই করা হবে। ইহুদি আবার প্রশ্ন করল, এরপর এদের পানীয় কী হবে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সালসাবিল নামক ঝরনার পানি। অতঃপর সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬০৩)

মহান আল্লাহ আমাদের জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া হামিদিয়া, বটগ্রাম

সুয়াগাজী, সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

Check Also

ইসরাইলের হামলায় ইরানে বিমান চলাচল বন্ধ, ইরাকে ব্যাপক বিস্ফোরণ

ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। এর পরই ইরানের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x