২৯ মে ২০২২, রোববার, বিকাল ৪.৩০টায় গণহত্যা জাদুঘরের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গণহত্যা জাদুঘরের প্রাঙ্গনে ‘গণহত্যা জাদুঘর : ইতিহাস চর্চা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকেন্দ্রীকরণ’ শীর্ষক একটি বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে বক্তব্য প্রদান করেন গণহত্যা জাদুঘর ট্রাস্টের সম্পাদক চৌধুরী শহীদ কাদের এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজ আহমেদ। দ্বিতীয় পর্ব অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে মুনতাসীর মামুনকে নিয়ে বলেন ড. মোল্লা আমির হোসেন, গবেষক ও লেখক শংকর কুমার মল্লিক, গবেষক পারভীন সুলতানা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুনতাসীর মামুন। সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘরে উপদেষ্টা সৈয়দ মনোয়ার আলী।
হাফিজ আহমেদ তার বক্তব্যে খুলনার স্থানীয় ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে গণহত্যা জাদুঘরের কর্মকাণ্ডকে তুলে ধরেন। তিনি গণহত্যা জাদুঘরের কিছু নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ডের দিকে আলোকপাত করে দেখানোর চেষ্টা করেন কীভাবে ইতিহাস চর্চার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটানোয় জাদুঘর অবদান রেখে চলছে।
ড. চৌধুরী শহীদ কাদের তার বক্তব্যে গণহত্যা জাদুঘরের পুরো আট বছরের ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গণহত্যা জাদুঘর খুলনায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কারণ বাংলাদেশে সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রাজধানী কেন্দ্রিক, সেই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে। তিনি বলেন, জেলায় জেলায় প্রশিক্ষণ কোর্স, নির্ঘণ্ট প্রকাশনাসহ নানা কাজের মাধ্যমে গণহত্যা জাদুঘর ইতিহাসচর্চাকে ছড়িয়ে দিচ্ছে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে। তিনি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যদিওবা সাংস্কৃতিক প্রভাব মাপার জন্য মাত্র ৮ বছর খুব অল্প সময়, কিন্তু ইতিমধ্যে যে প্রবণতা সমূহ দেখা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট যে, জাদুঘর খুলনা সহ নানা অঞ্চলে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হতে হচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুনতাসীর মামুন তার দীর্ঘ জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিগত আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি তরুণদের জন্য উপদেশমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, লক্ষ্য স্থির রেখে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। কী পেলাম সেই হিসাব নিকাশ থেকে কাজ না করে কাজের প্রতি ভালোবাসা থেকে কাজ করতে হবে। ভালোবাসতে হবে নিঃস্বার্থভাবে। তিনি আরো বলেন, জ্ঞানচর্চা আসলে সামষ্টিক কর্মকাণ্ড। যে ধরনের চর্চা ও আন্দোলন করতে হয় সম্মিলিত ভাবে। যতই মেধাবি হোক না কেন, একা একা বেশি দূর যাওয়া যায় না।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা বিষয়ক ভাস্কর্য প্রদর্শনী এবং শহিদ স্মৃতি স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদটি প্রকাশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।