টোকিওতে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনারে’ গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পন্ন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে, শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’-এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সই হওয়া ৬টি সমঝোতা স্মারক: জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন ও বাংলাদেশের শক্তি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, যা শক্তি খাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করবে।
অনোডা ইনক ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেড-এর মধ্যে (বিএসইজেড) জমির লিজ চুক্তি সংক্রান্ত দ্বিতীয় সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। অনোডা জাইকার সহায়তায় গ্যাস মিটার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং বিএসইজেডে নতুন উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম চালু করতে চায়।
বাংলাদেশ নক্সিস কোং লিমিটেড ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেড এর মধ্যে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকে পোশাক শিল্পের আনুষঙ্গিক উপকরণ তৈরির লক্ষ্যে জমি লিজ চুক্তি সম্পন্ন হবে।
গ্লেফিট এবং মুসাসি সিমিতসু ইন্ডাস্ট্রি, বিআইডিএ-এর সহায়তায় বাংলাদেশে ব্যাটারি-চালিত সাইকেল ও বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেলের কারখানা স্থাপনে চতুর্থ সমঝোতা স্মারকে যুক্ত হয়েছে।
সিফার কোর কো. লিমিটেড বাংলাদেশে ২০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে একটি জাতীয় পাইলট প্রকল্প চালু করবে, যার লক্ষ্য তথ্য নিরাপত্তা জোরদার এবং বাংলাদেশকে একটি কোয়ান্টাম-প্রচলিত ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করা।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বিআইডিএ-এর মধ্যে ষষ্ঠ সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, যা ইনটিগ্রেটেড সিঙ্গেল উইন্ডো প্ল্যাটফর্ম এর প্রাথমিক পর্যায়ে কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করবে।
সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠান শেষে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এখন আমাদের দায়িত্ব এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা।” গত ১৬ বছরে বাংলাদেশ যে সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই সময়ে একটি ভালো বন্ধু পাশে ছিল—জাপান। তাদের সহায়তায় আমরা সামনের পথে এগিয়ে যেতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “এই উদ্যোগ শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য নয়—এটি মানুষের জীবন পরিবর্তনের জন্য। আসুন আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাই।”
জাপানের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী শিনজি টেকুচি বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে, যা ১০ বছর আগের তুলনায় তিন-চতুর্থাংশ বেশি।”
জেট্রোর চেয়ারম্যান নরিহিকো ইশিগুরো এবং জেবিসিসিইসি’র চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জাপানি ব্যবসায়ী নেতারা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।