ট্রেনের যাত্রীদের ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে গেলে ভাড়ার ক্ষেত্রে ছাড় (রেয়াত) দিত বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু আগামী ৪ মে থেকে এ ছাড় প্রত্যাহার করায় বাড়ছে সব ধরনের ট্রেনের ভাড়া।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী গণমাধ্যমকে সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, আগামী ৪ মে থেকে রেয়াদ প্রত্যাহার করায় ট্রেনের ভাড়া সমন্বয় করা হবে। ভাড়ার হার রেলওয়ের বাণিজ্যিক শাখা নির্ধারণ করবে।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে একজন যাত্রীর রেয়াত কর ২০ শতাংশ, ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ২৫ শতাংশ আর ৪০০ কিলোমিটারের ওপরে ৩০ শতাংশ।
সূত্র আরও জানায়, মে মাসের ৪ তারিখ থেকে যদি একজন যাত্রী ট্রেনে ১০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ করেন তাহলে তাকে ভাড়া বেশি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলের এই প্রস্তাবনা পাস করেছেন, যা এই মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশ রেলওয়ে এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘এতদ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি প্রদান করা হয়। ২০১২ সালে ‘সেকশনাল রেয়াত’ রহিত করা হলেও দূরত্বভিত্তিক রেয়াত বলবৎ থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেনসমূহে ভাড়া বৃদ্ধি না করে শুধু বিদ্যমান দূরত্বভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে বিদ্যমান দূরত্বভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি আগামী ৪ মে থেকে কার্যকর করা হবে।’
গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী রেলের ভাড়া বাড়ছে বলে আভাস দিয়েছিলেন। তবে সেসময় ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির গুঞ্জন ওঠার পর রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, রেলের ভাড়া বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই।
২০১২ ও ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়িয়েছিল রেলওয়ে। ২০১২ সালের অক্টোবরে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক দফায় রেলের ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। এর প্রায় সাত বছর পর ২০২৩ সালের শেষার্ধে রেলওয়ের বিভিন্ন সেতু ও ভায়াডাক্টে পন্টেজ চার্জ আরোপের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
আর রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা চালু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এর মধ্যে সেকশনভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহার করা হয় ২০১২ সালে।