ফেনীর মুহুরীগঞ্জে ট্রেনের সঙ্গে বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কার ঘটনায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ জনে। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুহুরীগঞ্জ সেতু সংলগ্ন বালুমহাল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন – বরিশালের উজিরপুরের কাউয়ারান্থা এলাকার আবুল হাওলাদারের ছেলে ও দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকের চালক মো. মিজান (৩২), কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনোহর পুর গ্রামের আমিন হোসেনের ছেলে আবুল খায়ের মিয়া (৪০) ও তার ছেলে আশিক (১৪)। তারা বাবা- ছেলে দুইজন ওই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন এবং কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের শাকতলা গ্রামের নুরুল হকের ছেলে দিল মোহাম্মদ (২৩), একই গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে মোহাম্মদ রিপাত (১৭) ও মোহাম্মদ ইয়াসিনের ছেলে মো. সাজ্জাদ (১৮)।
তারা সবাই কুমিল্লার হাসানপুর স্টেশন থেকে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে বসে ঈদের বাজার জন্য চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের এ তিনজনসহ মোট ৬ জন নিহত হয়েছেন।
ফেনী রেলস্টেশন ক্যাম্প জিআরপি পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শাহ আলম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে দুইজন এবং একজনের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
নিহত দ্বীন মোহাম্মদের ফুফাতো ভাই ওমর ফারুক হৃদয় বলেন, সকালের দিকে গ্রামের ১১ জন বন্ধু মিলে তারা ঈদের শপিং করতে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে নিহত তিনজন ট্রেনের সামনে বসেছিলেন। পথিমধ্যে মুহুরীগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনটি একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। ময়নাতদন্ত ছাড়াই ঘটনাস্থল থেকে তাদের মরদেহ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়েছে।
চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, বন্ধুরা মিলে ঈদের শপিং করার উদ্দেশ্যে তারা চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় তিন বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে শাকতলা আজিজিয়া মাদ্রাসার মাঠে জানাজা শেষে পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন বালুমহাল এলাকায় চট্টগ্রামগামী একটি মেইল ট্রেনের সঙ্গে বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কা লাগে। এ সময় ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকটি অন্তত ১০০ মিটার সামনে গিয়ে পড়ে।
ফেনী রেলস্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ হারুন জানান, দুর্ঘটনার পর ওই ট্রেনটি পুনরায় পেছনের দিকে ফাজিলপুর স্টেশনে নিয়ে আসা হয়। সেটি বেলা সাড়ে ১১টার পর আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় যায়।