নিজস্ব প্রতিনিধি চট্টগ্রাম(রাঙ্গুনিয়া উপজেলা)
চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি চা বাগানের পাহাড় ঘেঁষা ফসলি জমি থেকে ১০/১৫টি ড্রাম ট্রাক দিয়ে স্কেলেটার মাধ্যমে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
এইভাবে মাটি কাটার ফলে জমির উপরিভাগে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চির মধ্যে থাকা জমির খাদ্যকণা ও জৈব উপাদান নষ্ট হচ্ছে। ফসলি জমি ধ্বংস করে মাটি কাটা রোধে আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই।
বুধবার(৩০ ডিসেম্বর) যায়,চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মহা সড়ক থেকে চা’ বাগানের গেইট দিয়ে অল্প ভিতরে ভড়ংছড়ি ব্রীজ সংলগ্ন এক পাশে পাহাড় অন্য পাশে ইছামতি তীর ঘেঁষে সমতল জায়গা থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছে মামুন নামের এক ব্যক্তি৷
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় আলহাজ্ব নুরুল আলম নামের এক ব্যক্তি ১৯৯১ সালের পরবর্তি সময় বিএনপি সরকার ক্ষমতা থাকা অবস্থায় চা বাগানটি সরকার থেকে লিজ নেন,আলম নামের ঐ ব্যক্তি লিজ নেওয়ার পর থেকে ওখানে থাকা শত বছরের পুরানো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে বিক্রি দেন৷
স্থানীয় আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি বলেন চা বাগানের মালিক আলম সাহেব এইখানে তেমন আসেন’না,২০০১ সালের পর স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতাদের সহয়তায় ঠান্ডাছড়ি চা বাগান(আলমের বাগান কিংবা আলমের বাংলো) থেকে প্রচুর গাছ কেটে ইটভাটায় দেয়া হয়,এখন এইখানে কোন গাছ নেই,চা বাগানেও আগের মতো উৎপাদন হয়না৷
চা বোর্ড কতৃক সূত্র থেকে জানা যায় ৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই চা বাগানটিতে শ্রমিক আছে ৭৯০ জন,আলহাজ্ব কাজী নুরুল আলমের মালিকানায় এই চা বাগান থেকে দেশের চা শিল্পে বড় ভূমিকা রাখছে,কিন্ত সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় ৩০/৪০ জনের চা শ্রমিক দিয়ে এই চা বাগানটি উৎপাদন কাজ চলছে,যদিওবা অনেকগুলো চা বাগান মারা গেছে৷
২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চা বাগানটি পরিদর্শন করেন,সেই সময় প্রতিনিধি দলটি প্রতিটি বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং সমস্যা সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দেন,চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় মালিক পক্ষ সে সময় লোকবল বেশি দেখানোর জন্য বাহির থেকে লোক ভাড়া করে চা শ্রমিক হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন৷
মাটি কাটার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করার হয় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানীর সাথে,তিনি বলেন ঠান্ডাছড়ি চা বাগানের কোন এলাকা থেকে মাটি কাটছে আমার জানা নেই তবে আপনাদের মাধ্যম থেকে জানার পর আমি যাছাই করে আইনি ব্যবস্থা নিব৷
মাটি কাটার সাথে সম্পৃক্ত ইসলামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ভরাতল এলাকার জব্বারের ছেলে মামুন,তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেই উত্তেজিত হয়ে যান,সেই বলে মগাছড়িতে ইটভাটার মাটি কাটা বন্ধ করেন এইখানে সবাই মাটি কাটছে কারো কোন অনুমতি লাগেনা আমি নিজেই প্রশাসন,বৈধভাবে মাটি কাটছি কারো কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই,যা পারেন করেন, আমাকে কিছু করার আগে সবাইকে করতে হবে৷ পাহাড়ি এলাকা থেকে মাটি কাটা যায় কিনা জানতে চাইলে সেই বলে এটা চা বাগানের মালিকের বউয়ের জায়গা আমাকে মাটি বিক্রি করতে দিয়েছে,তাঁর কাছে বারবার জানতে চাওয়া হয় আপনার মাটি কাটার বৈধতা আছে কিনা তিনি জোড় গলায় বলেন আমাদের জন্য সব বৈধ এইখানে কোন অনুমতি লাগেনা৷
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আন্তরিকতার সাথে বলেন বিষয়টি জানানোর জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি,পরে খবর নিয়েন আমরা কেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এসব বিষয়ে কাউকে কোন ছাড় নেই৷
দেশকে খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার নির্দেশ দিচ্ছেন এক ইঞ্চি জায়গাও যেন খালি না থাকে কিন্তু মামুন’র মতো মাটি খেকোদের কাছে সরকার ও রাষ্ট্রের কোন নির্দেশনা মেনে চলার সময় কোথায়? এরাতো খালি জায়গা দেখলে মাটি কেটে ইটভাটাসহ নানা জায়গায় বিক্রি করবে,ধংস করবে পরিবেশ,এদের দূরত আইনের আওতায় এনে পাহাড়,ফসলি জমি রক্ষার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল৷৷