ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় আজ বুধবার (১৭ জুলাই) এ সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে সকাল ১০টায় উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের কার্যালয়ে এ জরুরি সভা শুরু হয়। এ সময় তার কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক বিজিবি সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়।
সভায় যোগ দেয়া সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচর্য (শিক্ষা) সীতেশ চন্দ্র বাছার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি আমরা শোক ও সমবেদনা জানাই। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের এর আগেই হল ত্যাগের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামানের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় দেশের সব পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অন্যান্য কলেজসহ সকল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে নিরাপদ আবাসস্থলে অবস্থানের নির্দেশনা প্রদানের নিমিত্ত নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হলো।
ইউজিসির ঘোষণার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বুধবার (১৭ জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের আজ দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রাবির পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও বুধবার (১৭ জুলাই) থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের আজ বিকেল ৪টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উল্লেখ্য, চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। মঙ্গলবার সেই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।