স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফলের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের ১৮৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ‘ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, পুস্তক রচনা ও গবেষণা কর্মের জন্য অনুষদের ৭ জন শিক্ষককে ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আজ মঙ্গলবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন।
ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া ১৮৬ জনের মধ্যে একজন টেন মিনিট স্কুলের জনপ্রিয় শিক্ষিকা মুনজেরিন শহীদ। ঢাবির ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৩.৮৮ পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন তিনি। অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, মা-বাবার সাথে ক্যাম্পাসে অ্যাওয়ার্ড নিতে গিয়ে চট্টগ্রাম থেকে প্রথমবার একা ঢাকায় পড়তে আসার সময়টার কথা মনে পড়ছিলো।
“বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুর থেকেই টেন মিনিট স্কুলসহ আরো একটা পার্টটাইম চাকরি করতাম। নতুন জায়গায় এসে মানিয়ে নেওয়া, কাজ আর ক্লাসের সময় ব্যালেন্স করতে প্রেশারে পড়াশোনা তেমন একটা করাই হতো না। ক্লাসে সবসময় চুপচাপ থাকতাম। সবার মনোযোগ থেকে দূরে থাকতে ভালো লাগতো। কখনও ভাবিনি, ক্লাসে সবসময় চুপচাপ থাকা মেয়েটা, যে কি না পাস-ফেল নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতো সেই আমিই কখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে মার্স্টাসে ৩.৮৮ সিজিপিএ নিয়ে প্রথম হবো? আমি কেন, আমার মা নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি প্রথমে!”
তিনি আরও লিখেন, সিনিয়রদের ছবিতে দেখতাম তাঁরা মা-বাবাকে সাথে নিয়ে ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড নিতে আসেন, ছবি তোলেন। এবার প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে আমার সাথেও আমার মা-বাবা এসেছেন আমার এই অর্জনের অংশ হতে।
“দু’টো মার্স্টাস করে ফেলার পর হয়তো তৃতীয় আরো একটা মার্স্টাস আর করা হবে না। সেই হিসেবে এটাই হয়তো আমার শেষ একাডেমিক অর্জন! জীবনের শেষ একাডেমিক অ্যাওয়ার্ড নেওয়ার সময় মা-বাবাকে সাথে পাওয়াটা খুব স্পেশাল একটা ব্যাপার! আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমার স্বপ্ন হলো আরো অনেক মানুষকে তাদের স্বপ্নপূরণে সাহায্য করার। সবাই আমার জন্যে দোয়া করবেন যাতে আরো লাখো শিক্ষার্থীর স্বপ্নপূরণের যাত্রায় তাদেরকে আজীবন সহায়তা করে যেতে পারি।”
জানা যায়, ‘ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এমিরিটাস অধ্যাপক ড. এ.এফ. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপার্সন অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান।সূত্র-দি ডেইলি ক্যাম্পাস