চীনের সব ধরনের হুমকি উপেক্ষা করে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে পৌঁছালেন যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে সেখানে যান তিনি। এর মাধ্যমে ২৫ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনো রাজনীতিবিদ তাইওয়ানের ভূমিতে পা রাখলেন। এ নিয়ে ওই অঞ্চলে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ন্যান্সির সফরের আগেই যুদ্ধে প্রস্তুত বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বিপরীতে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্রও।
বেশকিছুদিন ধরেই স্পিকার ন্যান্সির সফর নিয়ে চীন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ন্যান্সি পেলোসি যদি তাইওয়ানে সফর করেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে মূল্য দিতে হবে বলে সতর্ক করে চীন।
চীনের হুমকি উপেক্ষা করে তাইওয়ানে গেছেন পেলোসি।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। তাছাড়া দেশটির বেশ কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজ তাইওয়ান প্রণালির কাছাকাছি রয়েছে।
ফ্লাইট রাডার টোয়েন্টি ফোর এর তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে এগারোটার দিকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে নামে পেলোসিকে বহনকারী মার্কিন বিমানবাহিনী পরিচালিত বোয়িং সি-৪০সি।
চীন হামলা চালিয়ে ভূপাতিত করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে চীন সাগর এড়িয়ে ফিলিপাইন ঘুরে তাইপেতে পৌঁছয় পেলোসিকে বহনকারী বিমানটি। ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম মার্কিন কোনো শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক তাইওয়ান সফর করছেন।
এর আগে তিনি সিঙ্গাপুরে যান। তার সফরসূচিতে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও।
উল্লেখ্য পেলোসির সফরের কিছুক্ষণ আগেও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত জানিয়ে চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রকে এর পরিণতির দায় বহন করতে হবে। এর আগে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে। এর পরিণতি ভোগ করতে হবে তাইওয়ানকে।
চীন তাইওয়ানের আকাশসীমার একেবারে কাছে যুদ্ধবিমানের মহড়া চালিয়েছে। সাগরে প্রস্তুত রয়েছে রণতরী। পুরো এলাকায় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছানোর সংবাদে ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তাইওয়ান প্রণালী অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে এই উস্কানিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব দেশটিকে নিতে হবে। পাশাপাশি, চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাগত স্বার্থকে অবমূল্যায়নের জন্য মূল্যও পরিশোধ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।