বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক আকরাম খানের ছোট ভাই, বর্তমান জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবালের চাচা আকবর খান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি …. রাজিউন)।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টায় চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
জানা গেছে, আকবর খান দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সকালে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন আকরাম খানের স্ত্রী সাবিনা আকরাম।
খান পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাদ আসর চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে আকবর খানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
তার বন্ধু ও খেলোয়াড়ী জীবনে সতীর্থ মো. মাসুদ পারভেজ জানান, ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালেও দিব্যি ঘুরে বেড়িয়েছেন, এখানে ওখানে গিয়েছেন কাজের প্রয়োজনে। কিন্তু ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার কিছুটা অসুস্থবোধ করলে নিজেই গাড়ির চালককে নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আকবর খান।
এদিকে বিসিবি পরিচালক ও আকবর খানের বড় ভাই আকরাম খান শোকাতুর কণ্ঠে জানান, ৭ ভাই ও ৫ বোনের পরিবারে আকবর ছিলেন সবার ছোট। তার কিডনি সমস্যা থাকলেও গতকাল মূলত হার্ট অ্যাটাকের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার।
মৃত্যুকালে আকবর খান দুই ছেলে ও স্ত্রীসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। তার দুই ছেলের একজন চট্টগ্রাম অনুর্ধ-১৬ বিভাগীয় দলের হয়ে খুলনা সফর সংক্ষিপ্ত করে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই চট্টগ্রামে পৌঁছান।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তামিম ইকবালের ছোট চাচা আকবর খান ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীরের নিকটাত্মীয়।
চাচার মৃত্যুর খবর জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তামিম লিখেছেন, ‘আমার ছোট চাচা আকবর খান আজ ভোরে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। উনি নিজেও একসময় ক্রিকেটার ছিলেন। অনেকেই হয়তো জানেন না, আমার প্রথম ক্রিকেট কোচ ছিলেন তিনিই। ক্রিকেটের মৌলিক শিক্ষার অনেকটুকুই আমি পেয়েছিলাম তার কাছ থেকে। ক্রিকেট বলে আমার প্রথম ম্যাচটিও খেলেছিলাম তার তত্ত্বাবধানে। ক্রিকেটের পথে আজ যতদূর আসতে পেরেছি, উনি যত্ন করে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন বলেই। মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে জান্নাতবাসী করুন। আমার চাচা ও তার পরিবারের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’
চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরে ক্রিকেট খেলার পর ২০১২ সালে চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীর পতাকাতলে খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টেনেছিলেন আকবর খান। প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে শোকাতুর মাসুদ পারভেজ জানালেন, চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণে অনেকটা জুড়ে খান পরিবারের অবদান। আকবর খান ছিলেন দারুণ অমায়িক ও বন্ধুপ্রিয় একজন মানুষ।
তার মৃত্যুতে বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন মো. আলমগীর ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন গভীর শোক জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত চট্টগ্রামের ক্রীড়া পরিবারের আকবর খান ভালো ক্রিকেট খেলতেন। তিনি স্টার ক্লাব, চট্টগ্রাম আবাহনীসহ বিভিন্ন ক্লাবে নিজের ক্রিকেট প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছিলেন।