ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে চারদিন ধরে আটকে রয়েছে রাশিয়ার সেই বিশাল সেনা বহর। ভারী অস্ত্রসহ বহরটির দৈর্ঘ্য ৪০ মাইলের বেশি। শিগগিরই বহরটি তীব্র ঠাণ্ডার কবলে পড়তে পারে। এতে বহু রুশ সেনার মৃত্যু হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এরই মধ্য রাতের বেলায় ওই এলাকায় তাপমাত্রা শূন্যের নিচে চলে যায়। আগামী দিনগুলোতে তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রিতে নামবে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। এসময় তুষারপাতও শুরু হবে। তাছাড়া আর্কটিক বাতাসের সঙ্গে পূর্বদিকের বাতাস মিলিত হওয়ার কারণে বুধবার তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রিতে নামতে পারে।
এমন বরফময় আবহাওয়ায় বহরে অবস্থান করা রাশিয়ান সেনাবাহিনীর জীবনযাত্রার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিয়েভ শহরের কেন্দ্র থেকে ১৯ মাইল দূরে লোহার ট্যাঙ্কসহ ভারী অস্ত্র নিয়ে তারা আটকা পড়েছেন।
বাল্টিক সিকিউরিটি ফাউন্ডেশনের একজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ গ্লেন গ্রান্ট বলেন, তীব্র ঠাণ্ডায় ট্যাঙ্কগুলোর ইঞ্জিন যদি না চালানো হয় তাহলে আস্তে আস্তে সেটি রেফ্রিজারেটরে পরিণত হতে পারে।
তিনি বলেন, ইঞ্জিন না চালালে ধাতব ট্যাঙ্ক একটি ফ্রিজ মাত্র। মৃত্যু এড়াতে রুশ সেনারা অপেক্ষা না করে বেরিয়ে পড়বে ও জঙ্গলের দিকে হাঁটবে। ট্যাঙ্কের মধ্যে অবস্থান করার অর্থই হলো মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা বলেও জানান তিনি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় জানায়, গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়ান সেনাদের বহরটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে অর্থাৎ কোনো দিকে এটি যাচ্ছে না।
কেউ কেউ বলছেন, ইউক্রেনের কর্দমাক্ত রাস্তায় হয়তো রুশ গাড়িগুলোর চাকা আটকে গেছে। এ ধরনের বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে, যদিও তার সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া, রুশ বহরটির জ্বালানি ও সৈন্যদের খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথাও বলেছেন কিছু বিশ্লেষক। এটিও কতটুকু সত্য, তা নির্ণয় করা কঠিন।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। টানা কয়েকদিন ধরেই দুপক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। এরই মধ্যে রাশিয়া ইউক্রেনের বেশ কিছু শহর দখলে নিয়েছে। এখন কিয়েভে সর্বাত্মক হামলার অপেক্ষায় রয়েছে বহরটি।