Saturday , 20 April 2024
শিরোনাম

ত্রিশালে বীরমুক্তিযোদ্ধা মতিন মাষ্টার হত্যার পর আরও ২ জনকে হত্যা,মানববন্ধন

আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর,ময়মনসিংহঃত্রিশালের খাঘাটি-জামতলি ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক বীর-মুক্তিযোদ্ধা আঃ মতিন মাষ্টার কে হত্যার পরে একই প্রতিষ্ঠানের দপ্তরী রফিকুল খুন হয়।১৪ এপ্রিল রাতে সেই মাদরাসার অফিস সহকারী সোহাগ কে খুন করতে যেয়ে সে প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদেরই হাতে খুন হয় কালাম।

এলাকায় পরপর তিন খুন,আতঙ্কিত এলাকাবাসী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খুনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সহস্রাধিক লোক।
রোববার দুপুরে উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের খাগাটি গ্রামের ঈদগাহ বাজারে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়। মানববন্ধনে বক্তারা এই তিন খুনের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানান।
মানববন্ধনে এলাকার ভীতসন্ত্রস্ত নারী-পুরুষ ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে তাদের দূর্বিষহ জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মাস্টারকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের শেষ পরিণতি আবুল কালামকে হত্যা।
মানববন্ধনে বক্তারা জানায়,আগের হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জেরে আসামিরা এক সাক্ষীর চাচাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। সর্বশেষ খুন হওয়া আবুল কালাম (৫৮) উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের জামতলী গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার রাত (১৫ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আবুল কালাম আজাদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
নিহত আবুল কালামের সন্তানরা জানায়, আমাদের বাবা একজন নিরীহ মানুষ। আমাদের চাচাতো ভাইকে রাস্তায় আটকিয়ে জিলানী বাহিনী মারধর করে। আমার বাবা ফিরাইতে গেলে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
কান্না ঝড়া কন্ঠে আবুল কালামের মেয়ে বলেন, জিলানীর কারণে আমরা ভাইবোনরা পিতৃহারা হয়েছি। তারা আমার বাবাকে অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে। সরকারের কাছে আমার বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাই। আমরা যেভাবে পিতৃহারা হয়েছি আর যেন কেউ সন্ত্রাসীদের নৃশংসতায় এমনভাবে পিতৃহারা না হয়।

নিহতের ভাতিজা মো. সোহাগ মিয়া বলেন, ২০১৮ সালের জুন মাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিন মাস্টারকে হত্যা করে তোফাজ্জল হোসেনসহ অন্য আসামিরা। ওই মামলায় দপ্তরি রফিকুল ইসলাম সামনে থেকে বিভিন্ন বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে মতিন মাস্টার হত্যার বিচার দাবি করেন। এই ঘটনার জেরে মতিন মাস্টার হত্যার মামলার আসামির ভাই আব্দুল কাদির জিলানী ২০১৯ সালের মার্চ মাসে দপ্তরি রফিকুল ইসলামকে হত্যা করেন।
তিনি আরও বলেন, মতিন মাস্টার হত্যা মামলার সাক্ষী ছিলেন আমার শ্বশুর। ওই সময় থেকেই আমাকে বিভিন্নভাবে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি দপ্তরি রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাক্ষী দেওয়ায় আমাকে মারধর করে তোফাজ্জল হোসেন ও আব্দুল কাদির জিলানী।
ওই মারধরের ঘটনায় চাচা আবুল কালাম মামলা করেন। এসব মামলায় আসামিরা জামিনে রয়েছেন। সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল রাতে আমি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় তিনরাস্তার মোড়ে আসামিরা আমার ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা করে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে আমার চাচা ও ভাইয়েরা ছুটে আসলে আসামিরা আমার চাচা আবুল কালামকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। আমরা আমাদের জীবনের নিরপত্তা চাই। আমার চাচা সহ সকল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানাই।প্রয়োজনে তাদেরকে ক্রসফায়ার দেয়ার আহ্বান জানান এলাকাবাসী।

Check Also

মামুনের বিলাসী গাড়ি-বাড়ির পেছনে প্রবাসীদের সাথে ভয়ংকর প্রতারণা

প্রবাসীদের অপহরণ, এরপর দেশ থেকেই ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে চক্রের কাছে স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x