আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর,ময়মনসিংহঃ:
ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় পিতা-মাতা বোন হারানো দুই এতিম শিশু জান্নাতুল ও এবাদুল্লাহ কে দেখতে ১৮ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় নিহত জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ছুটে গেলেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আখতারুজ্জামান।এ সময় তিনি নিহত দম্পতির পরিবারের খোঁজ-খবর নেন এবং আর্থিক সহায়তা করেন।
এ সময় তিনি বলেন,রাস্তায় ভুমিষ্ট হওয়া নবজাতক ও তার ইয়াতিম দুই ভাইবোনকে যারা সহযোগিতা করতে চান তারা হিসাব নাম্বারে পাঠাতে পারেন।হিসাব পরিচালনা করেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নবজাতকের দাদা।হিসাবের শিরোনাম 3324101028728 রত্না আক্তার এর নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তার হিসাব।সোনালী ব্যাংক,ত্রিশাল শাখা তিনি একটি অ্যাকাউন্ট খুলে দেন।
এছাড়াও সড়ক দুর্ঘনায় নিহত জাহাঙ্গীর,তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম এবং পেট থেকে অলৌকিক ভাবে বেরিয়ে আসা শিশুর নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা খাতুন।তাকে দত্তক দেয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে তার দাদা প্রতিবন্ধী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।দত্তকের বিনিময়ে অন্য দুই সন্তানের ভরণপোষণ এর দাবি করেছেন তিনি।
এদিকে উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ আখতারুজ্জামান অলৌকিক ভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুর প্রতিবন্ধী দাদা-দাদীর নিকট আর্থিক সহায়তা, প্রতিবন্ধী কার্ড,সব-সময় পরিবারের খোঁজ-খবর রাখা এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল্লাহ,সমাজসেবা অফিসার মাহমুদুল হাসান।
উল্লেখ্য যে,ময়মনসিংহের ত্রিশালে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তঃসত্তা স্ত্রী স্বামী সন্তানসহ নিহত হয়েছেন।১৬ জুলাই শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ত্রিশাল উপজেলার রায়মনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম(৪১), স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদা(৬)। এ ছাড়াও দুর্ঘটনায় অন্তঃসত্তা নারীর পেটের সন্তান বেরিয়ে আসে। নবজাতক এখনও বেঁচে আছেন। এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাককে আটক করা হয়েছে।
জানা যায়,ত্রিশাল উপজেলার রায়মনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্তা স্ত্রীর নিয়মিত চেকআপ করানোর জন্য দুপুরে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে একটি আলট্রাসনোগ্রাফি করতে দিলে তিনি একটি বেসরকারী ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফ করানোর পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় দ্রুতগামী একটি ট্রাক তাদেরকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই স্বামী-স্ত্রী ও মেয়ের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন জানান,এসময় অন্তঃসত্তা স্ত্রীর পেট ফেটে বাচ্চা বের হয়।অলৌকিক ভাবে সেই বাচ্চাটি এখনো বেঁচে রয়েছে।
ইতিমধ্যে ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে বাবা-মা সহ সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক ট্রাক চালক রাজু আহমেদ শিপনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।