বিএনপি থেকে অব্যাহতি নিয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে লড়বেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু। তিনি বলেন, আমি যতটুকু জেনেছি বিএনপি নির্বাচনে আসবে না। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। আমি চিন্তা করেছি দলের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবো। জনগণের স্বার্থে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মেয়রপ্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু এসব কথা বলেছেন। তিনি বর্তমানে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভায় উপস্থিত না থাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে মনিরুল হক সাক্কুকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১২ সালে কুসিক নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। সেই সময় সাক্কু দল থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক কমিটির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে মেয়র পদে জয়ী হন। পরবর্তীতে তার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে পুনরায় তাকে বিএনপিতে নেয়া হয়। ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বারের কুসিক নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মেয়র পদে জয়ী হন। তবে এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে জানা গেছে।
দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করলে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হতে পারেন; তারপর দল পরিবর্তন করার চিন্তা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সাক্কু বলেন, আমি বিএনপির বাইরের কেউ না। আগে বিএনপি করেছি, সারাজীবন বিএনপি করে যাব। বিএনপি আমার রক্তে মিশে আছে। আমি বিগত সময় বিএনপির কথা শুনিনি। কেন শুনিনি আমি তা বেগম খালেদা জিয়াকে বুঝিয়ে বলেছি। আমি যদি নির্বাচন না করতাম বিএনপি একটি মেয়র হারাতো। এ বছরও নগরবাসীর ইচ্ছায় আবারও নির্বাচন করছি।
আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত; তার সঙ্গে ভোটযুদ্ধে অংশ নিতে আপনি কতটুকু প্রস্তুত, এমন প্রশ্নে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা সদ্যপ্রয়াত আফজল খাঁনকে হারিয়ে জয়লাভ করেছি। এখানে ভয়ভীতি কিছু নাই। জনগণ আমাকে চেয়েছে, আমি নির্বাচিত হয়েছি। সুতরাং আওয়ামী লীগের যতই হেভিওয়েট প্রার্থী আসুক আমার সমস্যা হবে না। আমার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার জন্য জনগণের ইচ্ছায় শেষ বারের মতো মেয়র নির্বাচন করবো।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন ইভিএমের মাধ্যমে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ১৭ মে পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যলয়ে নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা নেয়া হবে। ১৯ মে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে যাচাই-বাছাই হবে। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে।
ভোটগ্রহণ শেষে ১৫ জুন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ভোটের আগে নির্বাচনী মালামাল বিতরণ করা হবে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে। এ নির্বাচনে ১০৫টি কেন্দ্রে ৬৪০টি ভোট কক্ষ থাকবে। নির্বাচনে দুইজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারসহ ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।বাংলাদেশ জার্নাল