দীপু মনি অন্যায় আবদার করতেন, আদালতকে কলিমুল্লাহ
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) তাকে গ্রেফতারের পর ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় কাঠগড়ায় বিচারকের সঙ্গে কথোপকথন হয় কলিমুল্লাহর, যেখানে তিনি দাবি করেন, দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন অন্যায় আবদার করতেন।
এদিন বিকাল ৪টার দিকে তাকে দুদকের সাদা মাইক্রোবাসে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে সরাসরি আদালতের কাঠগড়ায় নেওয়া হয়। পরে দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহজ বিন ইসলাম তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।এরপর ৪টা ১৬ মিনিটে বিচারক এজলাসে উঠেন। পরে ৪টা ২২ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। তখন কমিমুল্লাহ কাঠগড়ার সামনে এসে দাঁড়ান। এ সময় আসামিপক্ষে জামিন ও ডিভিশন চেয়ে আবেদন করা হয়।
তখন বিচারক বলেন, আপনি ও আপনার মা একই নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন? তখন তিনি বলেন, তিনি (তার মা) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডিজি ছিলেন। এজন্য সরকার নিয়োগ বোর্ডে সদস্য করেন।
তখন বিচারক বলেন, আপনি কি ভিসি, বিভাগীয় প্রধান ও ডিন ছিলেন? তখন কলিমুল্লাহ বলেন, আমিই প্রথম না। আমার আগের ভিসির ধারাবাহিকতায় রক্ষায় এসব দায়িত্বে ছিলাম। বিশেষ পরিস্থিতিতে এ দায়িত্বে থাকতে হয়েছে। বিচারক জানতে চান, চার বছরে উন্নয়ন খাতে কোনো টাকা পেয়েছেন? তখন তিনি বলেন, আমার আগের ভিসি নুর নবীর সময় ৯৯ কোটি টাকার কাজ চলমান ছিল। আমি দায়িত্ব নিয়ে কাজ চলমান রেখেছি।
তখন তিনি আরও বলেন, চাকরি বাণিজ্য বন্ধ করেছিলাম। তখন দুদকের আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমি বলেন, তিনি ঢাকায় থাকতেন। টকশো করতেন নিয়মিত। উনি কিভাবে ১৭/১৮ ঘণ্টা কাজ করেন? তখন কলিমুল্লাহ বলেন, আমি রাতের বেলা টকশো করতাম। তখন বিচারক জানতে চান, তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কিনা? তখন দুদক জানায়, অন্য কোনো মামলা নেই। তখন বিচারক আসামির উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, সেটা তদন্ত হলে পুরাটা বেরিয়ে আসবে। তখন কলিমুল্লাহ বলেন, আমি কোনো চিঠিপত্র পায়নি। আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকা হয়নি। সকালে বাসা থেকে আমাকে পুলিশ নিয়ে আসছে। এক পোশাকে একাই চলে এসেছি।তখন বিচারক বলেন, কবরে আর জেল খানায় একাই যেতে হবে। দুনিয়া থেকে যখন যাবেন সঙ্গে কেউ যাবেন না। যারা দুর্নীতি করে তারা কবরেও একা, জেল খানাতেও একা যাবে। আপনি কী করেছেন তা আলিমুল গায়েব জানেন, আপনিও জানেন। কিছুদিন পর দুদক জানবে। আপনাকে জেল খানায় যেতে হবে। আপনি কারাবিধি অনুযায়ী সুবিধা পাবেন। কোনো ওষুধপত্র প্রয়োজন হলে আপনাকে দেওয়া হবে। এরপর বেলা ৪টা ৪২ মিনিটে তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে কলিমুল্লাহকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গত ১৮ জুন দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম বাদী হয়ে কলিমউল্লাহসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম, হাবিবুর রহমান।