‘আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে চাই’ মন্তব্য করে এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বেতারের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মহান বিজয় দিবস ও বাংলাদেশ বেতারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রশংসা না করে শুধু হতাশ হওয়া ঠিক নয়। এখন আমাদের দেশের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তানসহ অনেক দেশ দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তারা আমাদের দেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আমাদের দেশের উন্নয়ন অনেক দেশে কেস স্টাডি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
বর্তমানে আমরা মাথাপিছু আয়ে ভরতের চেয়েও এগিয়ে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এ নিয়ে ভরতবর্ষে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিলো। কিন্তু আমাদের দেশে তেমন প্রশংসা দেখা যায়নি। এটা কোনো যাদুর কারণে হয়নি, এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার যাদুকর নেতৃত্বের কারণে।
এখন দেশে কুড়েঘর নেই মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যদি থাকেও সেটি ব্যবহৃত হয় গোয়ালঘর বা রান্নাঘর হিসেবে। এখন মেঠোপথ পাওয়া যায় না। আগে মানুষের চাহিদা ছিলো মোটা কাপড়, মোটা ভাতের। এখন দেশের ৬৫ ভাগ মানুষ মোটা চাল খায় না।
বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশকে আমরা স্বপ্নের ঠিকানায় এগিয়ে নিতে চাই। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, আমার সমস্ত সত্ত্বাজুড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি। যা আমাকে তাড়িত করে, আবেগাপ্লুত করে। যে দেখেনি, তার পক্ষে সেটা অনুভব করা কঠিন। গল্প পড়ে বা সিনেমা দেখে তা অনুভব করা সম্ভব নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা অনেক চড়া দামে স্বাধীনতা কিনেছি। হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালি, যে জাতিসত্ত্বা পাঁচ হাজার বছর ধরে কখনো স্বাধীন ছিলো না। বাঙালির কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র ছিলো না। সেই বাঙালির প্রথম জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তানিরা নিজের নাগরিকদের প্রবোধ দিতো এই বলে, ভুখা বাঙালি চলে গেছে ভালো হয়েছে। এখন সেই পাকিস্তানিরাই বলছে, বাংলাদেশ সবদিক দিয়ে তাদের চেয়ে এগিয়ে।
এসময় বাংলাদেশ বেতার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠানগুলো সংরক্ষিত রয়েছে। সে সবের অনেকগুলোই ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। যেগুলো হয়নি সেগুলো রিফরম্যাট করে ডিজিটালাইজড করে প্রচারের অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে নতুন প্রজন্ম স্বাধীন বাংলা বেতারের অনুষ্ঠানগুলো শুনতে পাবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) ও বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক খাদিজা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও বাংলাদেশ বেতারের সাবেক পরিচালক আশরাফুল আলম।