বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারে নিজেদের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এক সৌজন্য সাক্ষাতে এই আগ্রহের কথা জানান। রাজধানীর গুলশানে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এই সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।
করোনা ভাইরাস মহামারীতে ভ্যাকসিনসহ বাংলাদেশে যাবতীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশকে প্রদত্ত জিএসপি সুবিধা তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করায় ইইউ এর প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।
মাহবুবুল আলম বলেন, চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করছে যা দুই অঞ্চলের মধ্যে বন্ধুত্বের স্থায়ী অঙ্গীকারের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি গন্তব্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের তাৎপর্য তুলে ধরে মাহবুবুল আলম আরও বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৪৫ শতাংশ যায় ইউরোপে। তৈরি পোশাক ও হিমায়িত খাদ্য এর মধ্যে অন্যতম। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ইউরোপ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে।
তিনি বাংলাদেশের জলবায়ু বিষয়ক কর্মকান্ডে এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ইইউ এর এই সহায়তা জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, আধুনিক অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানী, সরবরাহ চেইন, উন্নত পানি ব্যবস্থাপনা, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মাহবুবুল আলম প্রস্তাবিত কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএএম) এ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জিএসপি মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জনান।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি ইইউ-এর মানবিক সহায়তার প্রশংসা করে মাহবুবুল আলম মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা কামনা করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এফবিসিসিআই সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ায় মাহবুবুল আলমকে শুভেচ্ছা জানান। এসময় তিনি বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ইইউ-এর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সক্রিয় সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, শমী কায়সার, মো. মুনির হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।