নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুরে স্কুল ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা হত্যার ঘটনায় আসামী আবদুর রহিম রনি ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
আসামি আবদুর রহিম রনি শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার জানান, আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাকে রিমান্ডে আনা হয়।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রনি পুলিশকে জানায়, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার সময় তাসনিয়া হোসেন অদিতার বাসায় যায়। বাসায় গিয়ে বন্ধ দরজা নক করলে অদিতা দরজা খুলে দেয়। তখন সে বাসায় প্রবেশ করে অদিতার সাথে গল্পগুজব করে। গল্পগুজবের এক পর্যায়ে রনি অদিতাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করে। অদিতা রনিকে বাধা দেয় এবং ধস্তাধস্তির সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য রনির ঘাড়ে ও গলায় আচড় দেয়। তখন অদিতাকে তার ভেতরের কক্ষের খাটে ফেলে পরিধেয় ওড়না দিয়ে হাত বেধে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। রাগান্বিত হয়ে অদিতা বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে রনি ভিকটিমকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।
রনি জানান, পরবর্তীতে রান্না ঘর থেকে ছোরা এনে অদিতার বাম হাতের রগ এবং গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে হাতের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর আসামি আবদুর রহিম রনি ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ঘরের আলমিরা ও ওয়ারড্রবের সকল কাপড় চোপড় ও কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভেতরের কক্ষের দরজা লক করে এবং ঘরের মূল দরজা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার জানান, আসামি ধর্ষণের কথা স্বীকার করেনি। তবে ডিএনএ ও অন্যান্য আলামত ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুরের নিজ বাসায় নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) ধর্ষণের পর গলাকেটে হত্যা করা হয়। রাতে নিহত শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর পুলিশের একাধিক দল পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।