নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন আহম্মেদসহ তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ গভর্নিং বডি। গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটিও। এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
শনিবার (৪ জুন) রাত ৮টার দিকে টানা চার ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। কলেজে সৃষ্ট এই অচলাবস্থা নিরসনে বিকেল ৪টায় জরুরি বৈঠকে বসে গভর্নিং বডি।
এদিকে অধ্যক্ষকে বরখাস্তের কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বর্তমান উপাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানকে। তবে তার বিরুদ্ধেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকায় তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মানতে নারাজ শিক্ষকেরা। ফলে তার পরিবর্তে অন্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে এখনও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল জলিল বলেন, অধ্যক্ষ ছাড়াও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলীকে তিন মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। এই সময়ে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুরো খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই শিক্ষক বলেন, ‘বর্তমানে যাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেওয়া হয়েছে তিনিও বিতর্কিত। বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের ডান হাত তিনি। তাকে আমরা মানি না। অন্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেওয়ার দাবিতে আমরা অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছি।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সৈয়দ রেজাউর রহমান, অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ, অভিভাবক সদস্য কবির আহমদ ভূইয়া, মেজবাউর রহমান রতন, জসীম উদ্দিন আহমদ, আব্দুস সত্তার খন্দকার, শিক্ষক প্রতিনিধি সেগুপ্তা ইসলাম, বজলুর রহমান সাইফুল, মোয়াজ্জেম হোসেন।
এর আগে গত শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে কলেজে অবাঞ্ছিত এবং আজ শনিবার থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার সকালে শিক্ষকরা একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যুক্ত হন শিক্ষার্থীরাও। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরাও অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে জরুরি বৈঠকে বসে গভর্নিং বডি।